মুন্সীগঞ্জে লক্ষাধিক মাটির মুচিতে নান্দনিক মণ্ডপ, দর্শনার্থীদের ভিড়

চার বছর ধরে এই মণ্ডপে পূজা হচ্ছে।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Oct 2022, 02:57 PM
Updated : 3 Oct 2022, 02:57 PM

কালের বিবর্তনে দুর্গা দেবীর প্রতিমা তৈরিতে এখন যেমন নানা ‘থিম’ ব্যবহার করা হচ্ছে; ঠিক তেমনি মণ্ডপের এসেছে নানা বিষয়-বৈচিত্র।

মুন্সীগঞ্জ শহরের নয়াপাড়ায় ডা. দিনেশ চন্দ্র মণ্ডলের বাড়ির পূজার মণ্ডপ এবারও সবার নজর কেড়েছে। মণ্ডপটি দেখার জন্য দর্শনার্থীরা ভিড় জমাচ্ছেন। প্রশংসা করছেন আয়োজক ও শিল্পীদের।

‘মুন্সীগঞ্জ তরুণ নবীন সংঘের’ আয়োজনে এই মণ্ডপটি এবার তৈরি করা হয়েছে মাটির মুচি দিয়ে।

গত বছর এখানে বাদামের খোসা দিয়ে পুরো একটি মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছিল। ফলে প্রতিবছরই দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকে এই মন্দিরটি।

নয়াপাড়া পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রনি গুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, চার বছর ধরে এই মন্দিরে পূজা হচ্ছে। আয়োজকরা প্রচুর পরিশ্রম করেছেন মণ্ডপটি তৈরিতে। প্রায় এক লাখ দুই হাজার মুচি ব্যবহার করা হয়েছে এতে।

“বিশেষ ব্যবস্থায় কুমারপল্লীতে তৈরি করা হয়েছে এসব পাত্র। পরে এগুলো মন্দিরে এনে ব্লুগান আঠা ব্যবহার করে লাগানো হয়েছে। টানা প্রায় এক মাস কাজ করতে হয়েছে।”

কেন মাটির পাত্র ব্যবহার করা হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে রনি বলেন, “মাটির পাত্র পরিবেশ বান্ধব। এ ছাড়া এই মাটির পাত্র ব্যবহারের কারণে কুমার শিল্পের সঙ্গে জড়িত মৃৎশিল্পীরাও লাভবান হয়েছে। আর মাটির পাত্র আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিরও অংশ।“

শহরের প্রাণকেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশে এই পূজোয় রোববার মহাঅষ্টমীর সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা যায়, আলোকসজ্জার কারণে মণ্ডপটি সত্যিই অসাধারণ লাগছিল। শত শত মানুষ দেবী দর্শনের পাশাপাশি মণ্ডপ ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন। সেলফি তুলছিলেন। ঢাক, কাশির বাদ্যে মণ্ডপ এলাকা মুখরিত। চারদিকে প্রচুর কোলাহল। কিছুটা বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে মানুষ দলে দলে পরিবার নিয়ে মণ্ডপ দেখতে আসছেন।

ব্যতিক্রমী এই পূজা দেখতে গিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল, পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল মামুনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তারাও এই মণ্ডপ, প্যান্ডেল ও সাজসজ্জা দেখে মুগ্ধ হন। আয়োজকদের কাছ থেকে জেলা প্রশাসক মণ্ডপ তৈরির অভিজ্ঞতা শুনেন।

পরে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের বলেন, “এই মণ্ডপে দেশজ পণ্যের ব্যবহার ছাড়াও নানা রকম বার্তা রয়েছে। যা আমাদের নিজস্ব কৃষ্টিকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সহায়ক হবে।“