ভাষা-সংস্কৃতির বিলুপ্তি মানে জাতির পরিচয় বিলুপ্তি: অংসুই প্রু

“সাতটা নৃ-গোষ্ঠীর শব্দভাণ্ডার নিয়ে পুস্তক প্রকাশ করা হয়েছে।”

সোমবার রাঙামাটিতে নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষার মাধ্যমে পাঠদান বিষয়ক শিক্ষকদের সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন অংসুই প্রু চৌধুরী।

কোনো জাতির ভাষা ও সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়ে গেলে সে জাতির পরিচয়ও বিলুপ্ত হয়ে যায় বলে মন্তব্য করেছেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী।

সোমবার উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে সাত দিনব্যাপী নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষার মাধ্যমে পাঠদান বিষয়ক শিক্ষকদের সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

অংসুই প্রু বলেন, “এই উপলব্ধি থেকে বর্তমান সরকার নৃ-গোষ্ঠীদের ভাষা সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষায় শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।”

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আরও বলেন, “এক সময় আমাদের পূর্বসূরীরা মাতৃভাষায় কথা বলার সময় ১০ ভাগ বাংলা শব্দ ব্যবহার করতেন। কিন্তু কালক্রমে সেটা বর্তমানে ৪০-৫০ ভাগে এসে দাঁড়িয়েছে। যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।”

তিনি বলেন, “স্মার্ট হওয়ার নামে আমরা যাতে নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে হারিয়ে না ফেলি সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।”

প্রশিক্ষণ নিতে আসা শিক্ষকদের উদ্দেশে অংসুই প্রু বলেন, “যদি ভাষা রক্ষার জন্য আপনার আন্তরিকতা কিংবা দায় না থাকে তবে কোনো উদ্যোগ কাজে আসবে না।”

তিনি বলেন, “এর মধ্যে আমরা সাতটা নৃ-গোষ্ঠীর শব্দভাণ্ডার নিয়ে পুস্তক প্রকাশ করেছি। ভবিষ্যতে এই শব্দভাণ্ডার আরও সমৃদ্ধ করা হবে।”

বর্ণমালা থাকলে কোনো ভাষা বিলুপ্ত হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

রাঙামাটির জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও প্যারাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনন্ত রঞ্জন চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের সদস্য প্রিয়নন্দ চাকমা, উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের পরিদর্শক আবদুল হালিম চৌধুরী, জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইকরাম উল্লাহ, সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জগদীশ চাকমা।

এই প্রশিক্ষণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০ জন শিক্ষক অংশ নেন। এ ছাড়া জেলার ১০ উপজেলায় এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়।