“মানুষ এখন মানুষের কথা শোনে না, মানে না। অথচ বনের পশু কথা শোনে, মানে,” বলেন শুকুর আলী।
Published : 15 Jan 2025, 08:31 PM
কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌর এলাকার রাজারামক্ষেত্রী গ্রামের শুকুর আলীর সঙ্গী বনের বেজি।
ছেলে দুলাল মিয়া জঙ্গল থেকে বেজির বাচ্চা ধরে নিয়ে আসার পর থেকে শুকুর আলীই প্রাণীটিকে লালন-পালন করছেন। আদর করে নাম রেখেছেন ‘রূপালী’।
শুকুর জেলার উলিপুর-রাজারহাট সড়কের নারিকেল বাড়ি সন্ন্যাসী তলায় চা-বিস্কুটের দোকান করেন।
তিনি বলেন, ছেলে পাড়ার জঙ্গল থেকে বেজির বাচ্চাটি ধরে আনার পর তিনি একটি খাঁচায় আটকে রাখেন। তবে দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই বেজিটি বাড়ি থেকে তার দোকানে নিয়ে এসে খাঁচা থেকে ছেড়ে দেন।
দোকান থেকে দুধ, কলা, সমুচা, চিপস, বিস্কুটসহ নানা মুখরোচক খাবার খেয়ে আশপাশেই ঘুরে বেড়ায় বেজির বাচ্চা।
শুকুর আলী বলেন, রূপালী নাম ধরে ডাক দিলে দৌড়ে কাছে চলে আসে। খেয়ে-ধেয়ে লাফালাফি করে। সন্ধ্যায় ফের খাঁচায় তুলে বাড়ি নিয়ে যান।
কিছুদিন পর থেকে খাঁচা ছাড়াই শুকুর আলী বেজিটি বাড়ি থেকে হেঁটে দোকানে নিয়ে আসেন ও বাড়িতে নিয়ে যান।
দিন যতই যাচ্ছে, বেজি আর শুকুর আলীর মধ্যে সখ্যতা ততই বাড়ছে। তিনি শ্যাম্পু দিয়ে বেজিটিকে গোসল করান।
এলাকায় জানাজানি হলে বেজি আর শুকুর আলীর বন্ধুত্ব দেখার জন্য দোকানে আসেন লোকজন। কেউ কেউ বিস্কুট, কলা, সমুচাসহ নানা খাবার খেতে দেন।
বেজিটি এ পর্যন্ত কাউকে কামড় বা আঁচড় দেয়নি দাবি করে প্রতিবেশী সবুজ মিয়া বলেন, “শুকুর আলী পশু-পাখি প্রেমী। শুধু বেজি নয়, তিনি জঙ্গলের ইঁদুরকেও পোষ মানিয়েছিলেন। এখনো মুক্ত আকাশে ঘুরে বেড়ানো পাখিকে ডেকে কাছে এনে খাবার খাওয়ান। তার এসব দেখে আমরা আশ্চর্য হই।”
শুকুর আলীর ভাষ্য, “মানুষ এখন মানুষের কথা শোনে না, মানে না। অথচ বনের পশু কথা শোনে, মানে। আমি মানুষকে দেখানোর জন্য বেজিটিকে ছোট থেকে পুষতেছি। বেজিটিকে আমি সন্তানের মতই লালন-পালন করতেছি।”