মুন্সীগঞ্জে ছাত্র-জনতার সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
Published : 08 Sep 2024, 09:51 PM
বাংলাদেশের ‘তথাকথিত’ রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর মানুষের আস্থা আর নেই বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম।
তিনি বলেছেন, “আপনাদের একটি জিনিস খুব ভালো করে মনে রাখতে হবে। যেদিন ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছে এবং ছাত্ররা সামনের সারিতে ছিল সেদিনই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটেছে।
“বিগত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল তাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করেছে। তারা ওই ফ্যাসিস্ট সরকারকে নাকি পতন ঘটাবে! তারা কি পেরেছে? বিগত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন ঈদের পরে, পূজার পরে, বিভিন্ন সময়ের পরে বিভিন্ন প্রোগ্রাম দেওয়ার চেষ্টা করেছে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের জন্য, তারা কি পেরেছিলো?”
সারজিস আলম বলেন, “এই ছাত্র-জনতার উপরে বর্তমান বাংলাদেশের মানুষের যে আস্থাটি রয়েছে, বাংলাদেশের তথাকথিত রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর বাংলাদেশের মানুষের সেই আস্থাটি আর নেই। আপনাদের ওপরে বাংলাদেশের এত এত মানুষ যে আস্থাটি রেখেছে এখন সময় হচ্ছে তাদের আস্থার প্রতিদান দেওয়া।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে সফরের প্রথম পর্যায়ে রোববার মুন্সীগঞ্জে ছাত্র-জনতার সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সারজিস আলম এসব কথা বলেন।
সারজিস আলমসহ ১৪ সদস্যের দল সরকারি হরগঙ্গা কলেজ মাঠে ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায় শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায়’ অংশ নেয়। সেখানে ব্যানার-মিছিল নিয়ে সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেয়।
এ সময় তিনি ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ছাত্র-জনতার উদ্দেশে ভবিষ্যত করণীয় সম্পর্কে বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতন-নিপীড়নের ডকুমেন্টসগুলো জীবন্ত রাখতে হবে। তারা চাইবে স্মৃতিগুলো ভুলিয়ে দিতে। যদি এগুলো ভুলে না যান তাহলে তারা আবার এসে ক্ষমতায় বসতে পারবে না।
“আগামীতে এই বাংলাদেশ যারা শাসন করবে কিংবা রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবে, যদি তাদের উদ্দেশ্য থাকে আবার কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার কায়েম করার- তারাও চাইবে আপনার স্মৃতি থেকে ফ্যাসিজমগুলো মুছে দেওয়ার জন্য। তাই ফেইসবুক পোস্ট, ছবি, ভিডিও, ডায়েরি লেখা বা বইয়ের মাধ্যমে সেগুলো লিপিবদ্ধ করতে হবে।”
এর আগে সকালে জেলা শহরের খালইস্ট এলাকায় আফতাবউদ্দিন কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলার একটি রেস্টুরেন্টে আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
পরে সেখানেই জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তারা।
এতে জেলা জাতীয় পার্টির একাংশ, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, সিপিবির নেতাকর্মীরা অংশ নেন। তবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কেউ মতবিনিময় সভায় অংশ নেননি।
প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন ইব্রাহীম নিরব, মম, সালেয়হীন আবেদিন অয়ন, মোবাশ্বের, জেদনি, রোহান, ইফতি, তালহা, মো. আনোয়ার হোসাইন, মো. হৃদয়।