শ্রমিক ‌অসন্তোষের মধ্যে টঙ্গীতে টুপি কারখানায় আগুন, নিভল ৩ ঘণ্টা পর

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানায় ইট ছুড়ে হামলা চালালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে, এরমধ্যেই আগুন লাগে ভবনটিতে বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2023, 07:10 PM
Updated : 7 May 2023, 07:10 PM

দাবি দাওয়া নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে টঙ্গীতে একটি টুপি তৈরির কারখানায় লাগা আগুন প্রায় তিন ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

রোববার রাত নয়টার দিকের গাজীপুরা সাতাইশ এলাকার জিজে ক্যাপ অ্যান্ড হেডওয়ার লিমিটেড নামের এ কারখানার আগুন রাত পৌনে ১২টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট।

তবে আগুনে হতাহতের কোনো ঘটনার তথ্য নেই বলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে জানিয়েছেন টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ইকবাল হাসান।

এ কারখানায় আগুন লাগার কয়েক ঘণ্টা আগে টঙ্গীর মিল গেইট নামাপাড়ায় ঝুটের গুদাম এবং পাগাড় এলাকার হোসেন ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং মিলস লিমিটেডেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

সাতাইশ এলাকার সাততলা ভবনের টুপি তৈরির কারখানা জিজে ক্যাপের পঞ্চম তলায় আগুন লাগার আগে সেখানে দুপুর থেকে বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলন করছিলেন এবং সন্ধ্যার পর পুলিশের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সংঘর্ষও বাঁধে।

কারখানার বাইরে পুলিশের সঙ্গে একদল শ্রমিকের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে কারখানায় আগুন জ্বলতে দেখা যায় বলে জানান টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান।

তিনি জানান, কর্তৃপক্ষের দুর্ব্যবহারসহ বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা দুপুর থেকে কারখানার মধ্যে কর্মবিরতিসহ আন্দোলন করে আসছিলেন। বিকাল পর্যন্ত তারা মালিকপক্ষের সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা চালিয়ে আসছিল। পরে একদল শ্রমিক কারখানা থেকে বেরিয়ে আসে। কিছু সময় তারা দলবল নিয়ে বাইরে থেকে কারখানায় হামলা, ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।

এতে কারখানায় উত্তেজনার কথা শুনে আগে থেকে সেখানে মোতায়েন পুলিশ তাদের বাধা দিতে গেলে শ্রমিকরা পুলিশের ওপর মারমুখী হয়ে ওঠে বলে তিনি জানান। শ্রমিকদের থামাতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এর মাঝেই রাত ৯টার দিকে কারখানার উপরের দিকে আগুন লাগার খবর আসে।

আগুনের খবর পেয়ে টঙ্গী, শ্রীপুর, গাজীপুর ও উত্তরা ফায়ার স্টেশনের আটটি ইউনিটের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মোঃ রাশেদ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা কারখানাটিতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে দেখেন। আগুন লাগার পর ভেতরে থাকা শ্রমিকরা দ্রুত বেরিয়ে এসে সড়কে অবস্থান নেন।

টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, কারখানার ভেতরে কোনো শ্রমিক নেই। অগ্নিকাণ্ডের কারণ বিষয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলেননি।

কারখানাটির মানব সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, কারখানাটিতে প্রায় ১ হাজার ৬৫০ জন শ্রমিক কাজ করেন। আগুন লাগার পর শ্রমিকরা কারখানা থেকে বেরিয়ে সড়কে অবস্থান নেন। কোনো শ্রমিক নিখোঁজের সংবাদ তারা পাননি বলে জানান তিনি।

টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি শাহ আলম জানান, শ্রমিকদের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষের দুব্যর্বহারসহ নানা কারণে কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ ছিল। পরে তারা ‘শ্রমিকরা কারখানা ভবনের পঞ্চম তলায় আগুন দিয়েছেন’ বলে তারা শুনেছেন।

আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে শ্রমিকরা নিচে গিয়ে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন।