Published : 24 Jul 2024, 08:42 PM
বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ডুবির ঘটনায় উদ্ধার তৎপরতাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিনে কোস্ট গার্ডের চৌকিতে স্থানীয়রা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি করেছেন বাহিনীর সদস্যরা। এতে একজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার দুপুরে টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার পথে সাগরের গোলারচর মোহনায় এফবি সাদ্দাম নামের মাছ ধরার ট্রলারটি ১২ যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। স্থানীয়দের তৎপরতায় ১১ জন উদ্ধার হলেও একজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এ ঘটনার উদ্ধার তৎপরতা চালানো নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কোস্ট গার্ডের ঝামেলা তৈরি হয়। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা কোস্ট গার্ডের চৌকিতে হামলা, ভাঙচুর চালায়। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পরিস্থিতি থমথমে ছিল।
টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, “ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজদের উদ্ধারকে কেন্দ্র করে কোস্ট গার্ড সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয়দের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে কোস্ট গার্ড সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে ফাঁকা গুলি ছুড়ে।”
এতে মোহাম্মদ হানিফ নামের স্থানীয় এক যুবক হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন- এমন খবর শুনেছেন বলে জানান ওসি। তিনি বলেন, তবে ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য পরে খোঁজ-খবর নিয়ে জানানো সম্ভব হবে।
সেন্ট মার্টিন সার্ভিস বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ৬৫ দিন মাছ ধরার সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে সেন্ট মার্টিনের সাদ্দাম হোসেনের মালিকাধীন ‘এফবি সাদ্দাম’ টেকনাফ ঘাটে ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ট্রলারটি সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে যাত্রা করে।
১২ জনের ট্রলারটি দুপুর আড়াইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপ অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরের গোলারচর মোহনায় পৌঁছলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে পড়ে ডুবে যায়।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, ঘটনার পর পরই সেন্ট মার্টিন ঘাট থেকে কয়েকটি ফিশিং ট্রলার, কয়েকটি সার্ভিস বোট গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ১১ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও নিখোঁজ রয়েছে একজন।
নিখোঁজ নূর মোহাম্মদ সাগর সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং দ্বীপের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন বলে জানান খোরশেদ আলম।
সেন্ট মার্টিনের কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, ট্রলার ডুবির পর কোস্ট গার্ডকে অবহিত করা হলেও তারা উদ্ধার তৎপরতায় সাড়া দেননি। কিন্তু ১১ জনকে উদ্ধার করে ঘাটে ফিরলে কোস্ট গার্ড সদস্য তাদের সঙ্গে ছবি তোলার চেষ্টা করে। এতে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হন। এ থেকেই হামলার সূত্রপাত হয়।
তবে এ ব্যাপারে কোস্ট গার্ডের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, “কোস্ট গার্ডের সঙ্গে দ্বীপবাসীর একটি উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ফাঁকা গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। দ্বীপের পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।”