Published : 08 May 2024, 04:07 PM
সিলেটে চারটি উপজেলায় প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। কেন্দ্রে ভোটার কম; ফলে লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা না থাকায় ভোটাররা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
এ জেলার সদর, গোলাপগঞ্জ, দক্ষিণসুরমা ও বিশ্বনাথ উপজেলায় ভোট হচ্ছে। এর মধ্যে বুধবার সকালে সদর ও বিশ্বনাথ উপজেলার কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম দেখা গেছে।
তবে বেলা দুপুর ১২ পর্যন্ত চার উপজেলার কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সদর ও বিশ্বনাথ উপজেলার কয়েকটি কেন্ন্দ্রে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোটারদের অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছেন ভোট দিতে। বিভিন্ন বয়সী ভোটারদের ভিড়ে ৮০ বছরের এক বৃদ্ধকেও দেখা গেছে। জীবনে প্রথম ভোট দিয়েছে, এমন ভোটারও ছিল।
বিশ্বনাথ সরকারি কলেজ কেন্দ্রে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে গিয়ে ফাঁকাই দেখা যায়। সেখানে কথা হয়, এই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের সঙ্গে।
নজরুল জানান, কেন্দ্রের মোট ভোটার ১ হাজার ৭৯০ জন। এর মধ্যে চার ঘণ্টায় চারটি বুথে পড়েছে ৩২১টি ভোট। এর মাঝে পুরুষ ১৮৮ জন; নারী ১৩৩ জন। চেয়ারম্যান প্রার্থী সবার এজেন্ট আছে। তবে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর সবার এজেন্ট নাই।”
ভোটার কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সিলেটের মানুষ দেরিতে ঘুম থেকে ওঠে, তাই সকালে ভোটার উপস্থিতি কম।"
এই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা ৩৫ বছর বয়সী আসমা বেগম বলছিলেন, “মানুষজন কম, সিরিয়াল ধরা লাগবে না। ঝামেলা ছাড়াই ভোট দিতে পারব।"
ওই কেন্দ্রে প্রথমবারের মত ভোট দিতে এসেছিলেন জাহেদ আহমদ। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় কথা হলে তিনি বলেন, "ভোট দিতে একটু ভয় লাগের; থুরা খুশিও লাগের।"
উপজেলার সাদিরগাঁওয়ের ৮০ বছর বয়সী শাহজাহান মিয়া বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। তারপরও জনপ্রতিনিধি বাছাই করতে ভোটকেন্দ্রে এসেছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, “জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে হলে ভোট তো দেওন লাগব। বুড়াখালে আইছি তাতে কী?
৪৭ বছর বয়সী শমীম উল হক শিকদার পুরো পরিবার নিয়ে এসেছেন ভোট দিতে। তিনি বলেন, " দুই মেয়েসহ ছেলেকে ও বউকে নিয়ে একসঙ্গে এসেছি। তবে ভোট আমাদের দুজনের রয়েছে। ছেলেমেয়েরা এসেছে ভোট দেওয়া দেখতে।
“তারা সকাল থেকেই আসার জন্য বলছিল, তাই নিয়ে এসেছি।"
ভোটার কম কেমন লাগছে? জানতে চাইলে রাব্বিকুল মিয়া বলেন, “গুতাগুতির চেয়ে মানুষ কম বালা, ঝামেলা ছাড়া ভোট দেওয়া যায়।"
বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া কেন্দ্রে কথা হয় দিলোয়ারা বেগম (৬০) ও রুপিয়া বেগমের (৬৯) সঙ্গে।
দিলোয়ারা বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম বিকালে আইতাম, শুনছি মানুষ কম তাই চলে আসছি।”
আর রুপিয়া বলেন, “কেন্দ্রে লোকজন বেশি নাই। তাই সময় লাগেনি; ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছি।"
জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বজলুল হক বলেন, তার কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ হাজার ৩১৫ জন। প্রথম চার ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৩৩৩টি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে পারে।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজার দ্বি-পাক্ষিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের নারী কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নুর আলম বলেন, মোট ২ হাজার ৩৮১ জন ভোটারের মধ্যে বেলা ১টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত ৫৬১টি ভোট কাস্ট হয়েছে।
তিনি বলেন, “সকাল ১০টা ১২ মিনিট পর্যন্ত ভোটার ছিল। “এখন ভোটার কম, পরে হতে পারে।"
এই প্রতিষ্ঠানের পুরুষ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মুন্সী মহদুদ আহমদ বলছিলেন, কার কেন্দ্রে ২ হাজার ৪৪৫ জন ভোটারের মধ্যে বেলা ১২ পর্যন্ত ৪৯৬ জন ভোট দিয়েছেন। এ পর্যন্ত ২০ দশমিক ২৮ ভাগ ভোট পড়েছে।
দশ এলাকার মানুষ এই কেন্দ্রের ভোটার জানিয়ে তিনি বলেন, “দুপর হওয়াতে ভোটারের উপস্থিতি বর্তমানে কম হয়তো।”