“যারা সত্যিকারের বিএনপি, তারা দিল্লির দালাল না, আপনারা সংবিধান বাতিল চান”, বলেন ফরহাদ মাজহার।
Published : 25 Jan 2025, 12:40 AM
বিএনপি যদি খালেদা জিয়াকে সম্মান করে তাহলে, তাদের উচিত ছাত্রদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো বলে মন্তব্য করেছেন কবি, রাষ্ট্র চিন্তক ফরহাদ মজহার।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “আপনারা জিয়াউর রহমান বিরোধী রাজনীতি করতেছেন। যারা সত্যিকারের বিএনপি, তারা দিল্লির দালাল না, আপনারা সংবিধান বাতিল চান।
“এই গণ-অভ্যুত্থান সফল হত না, যদি খালেদা জিয়া নির্বাচন করবেন এ নীতিতে অটল না থাকতেন। বিএনপি যদি খালেদা জিয়াকে সম্মান করে তাহলে, আজকে ছাত্রদের সঙ্গে এসে দাঁড়ানো উচিত।”
শুক্রবার বিকালে কক্সবাজার শহরে পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ সুভাষ হলে ‘গণ সার্বভৌমত্ব ও নতুন রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী গঠন: প্রেক্ষাপট বঙ্গোপসাগরের ভূরাজনীতি’ শিরোনামে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন ফরহাদ মজহার।
সম্প্রতি ছাত্রদের রাজনৈতিক দল করা নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের করা মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ছাত্ররা রাজনীতি করবে না, এ ধরনের ‘ননসেন্স’ কথা বলবেন না।
বাহাত্তরের সংবিধানকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সংবিধান দাবি করে এর বাতিল চেয়েছেন ফরহাদ মাজহার। তিনি বলেন, “বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল করা মানে মুক্তিযুদ্ধকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। বাহাত্তরের সংবিধানের পক্ষের লোক হল দিল্লির, বিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের।
“সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদকে একসঙ্গে ফ্যাসিস্ট বলে। গণতন্ত্র রাষ্ট্র মানেই ধর্মনিরপেক্ষতা। দিল্লির পক্ষে ইসলাম নির্মূল করার জন্যই বাহাত্তরের সংবিধান রচিত হয়েছিল।”
বর্তমান ব্যবস্থায় সেনাবাহিনী রেফারির ভূমিকা পালন করছে মন্তব্য তিনি বলেন, “কারণ ১/১১ এর অভিজ্ঞতা খারাপ। পুলিশের কাজ সেনাবাহিনী করতে চায় না। তারা ব্যারাকে ফিরতে চায়।“
আমলারা শেখ হাসিনার প্রিয় ছিল মন্তব্য করে ফরহাদ মজহার বলেন, “দেশ কিন্তু আমলারা চালায়। গণ সার্বভৌমত্ব গড়ে তুলতে না পারলে আমলাতন্ত্র ভাঙবে না।”
সেমিনারে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বক্তব্য দেন।
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাওয়ায় বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ, দিল্লির ও বিএনপির বক্তব্য এক হয়ে যাচ্ছে। যে দিল্লি ছয় মাস আগেও নির্বাচন চায় নাই, তারা এখন বাংলাদেশে নির্বাচনের জন্য উতলা হয়ে উঠেছে। কারণ, কোনো না কোনোভাবে দিল্লি এখানে গণতন্ত্র চায় না।
“বিএনপি নির্বাচন কেন্দ্রিক কত বড় ফাঁদে পা দিচ্ছে, সেটা হয়ত তারা এখনো বুঝতে পারছেন না। দিল্লির মুখে বিএনপি, অন্তরে আওয়ামী লীগ। এটা বিএনপিকে বুঝতে হবে।”
জানুয়ারির পরে বাংলাদেশের কেউ বিশ্বাস করেনি আওয়ামী লীগের পতন হবে, কিন্তু ছয় মাস পর ছাত্ররা সেটি ঘটিয়েছে, বলেন তুষার।
‘ভাব বৈঠকী’ সংগঠনের পাশাপাশি আয়োজক হিসেবে ছিল কক্সবাজার কমিউনিটি এলায়েন্স ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।
সেমিনারে কক্সবাজার কমিউনিটির সংগঠক মুহিব্বুল মুক্তাদিল তানিম, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য এস এম সুজা উদ্দিন, এবি পার্টির সহসভাপতি জাহাঙ্গীর কাসেম, কক্সবাজার শহর জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফারুক, অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. আহমেদ ফেরদৌস, এবং ‘ভাব বৈঠকী’র মুখ্য সংগঠক মো. রুমেল বক্তব্য দেন।