“এক দফা দাবি অনুযায়ী-কোটার বিষয় নিয়ে সংসদে আইন পাশ করতে হবে। আদালতের কাছে আমাদের কোনো দাবি নেই, আমাদের দাবি আইন বিভাগের কাছে।”
Published : 10 Jul 2024, 01:23 PM
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের এক দফা দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির আওতায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের উভয় লেনে যানজটের সৃষ্টি হয়।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে ‘সংবিধানের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ স্লোগান দেন শিক্ষর্থীরা।
শিক্ষার্থীদের একদফা দাবি হলো- সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে নূন্যতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করা।
অবরোধ চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব বলেন, “সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় প্রজন্মের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা প্রথা বহাল রাখার যৌক্তিকতা নেই। তাই আমরা কোটার যৌক্তিক সংস্কার চাই।
“২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল করে আমাদের আবার একটা মূলা ঝুলিয়ে দেবে সেটার পক্ষে আমরা নই।”
এদিকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটার বিরোধিতায় আন্দোলনের মধ্যে সব পক্ষকে চার সপ্তাহ স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে আদেশ দেন।
আদেশের পর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়-তারা আদালতের রায়ের পরও মাঠ ছেড়ে যাবেন না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইমন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের এক দফা-দাবির সঙ্গে আদালতের রায়ের সম্পর্ক নেই, সেই প্রেক্ষিতেই আমরা মাঠ ছাড়ব না।
“এক দফা দাবি অনুযায়ী-কোটার বিষয় নিয়ে সংসদে আইন পাশ করতে হবে। আদালতের কাছে আমাদের কোনো দাবি নেই, আমাদের দাবি আইন বিভাগের কাছে।”
এদিকে অবরোধের খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবিরসহ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। এ সময় আলমগীর কবির বলেন, “যেহেতু দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি চলছে; সেহেতু আমি নৈতিকভাবে শিক্ষার্থীদের বাধা দিতে পারি না।
“আমরা শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে বলেছি। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভোগান্তির বিষয়টিও খেয়াল রাখতে অনুরোধ করেছি।”