টেকনাফের ইউএনও বলেন, “পৌরসভা, সদর ও সাবরাংয়ের বাসিন্দারা কিছুক্ষণ পর থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাচ্ছেন। এতে করে তারা আতঙ্কগ্রস্ত।”
Published : 20 Jun 2024, 07:45 PM
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের জেরে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ যেন থামছে না। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া বিস্ফোরণের শব্দ থেমে থেমে অব্যাহত রয়েছে বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত।
টেকনাফ সীমান্তের লোকজনের ভাষ্য, রাখাইন রাজ্যের মংডুতে মর্টার শেলের বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে সীমান্ত এলাকা। মংডু টাউনশিপের আশপাশের কাদিরবিল, মংনিপাড়া ও সুদাপাড়া গ্রাম থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার পর্যন্ত থেমে থেমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠন আরাকার আর্মি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এরই মধ্যে সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষা বাহিনীর পোস্টগুলোর পতন হয়েছে। আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যে অনেক এলাকারই নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
এখন মংডু টাউনশিপের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। সেই গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ অবিরত আসছে এপারের সীমান্তের গ্রামগুলোতে। মংডু টাউনশিপের বিপরীতে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, “রাখাইন রাজ্যের গোলাগুলির কারণে এখানকার লোকজন রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না। মংডু টাউনশিপ থেকে কিছুক্ষণ পর থেমে থেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে।
“এতে করে এলাকার ঘরবাড়ি কেঁপে ওঠছে। একেবারে ভূমিকম্পের মতো। বিকট শব্দে ঘুম থেকে ছেলেমেয়েরা ভয় পেয়ে কেঁদে ওঠছে। বিস্ফোরণের শব্দে সাবরাংসহ পুরো টেকনাফের এই অবস্থা। এতে এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।”
টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, “মঙ্গলবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল পযন্ত টানা মিয়ানমারের ওপারের বিস্ফোরণে এপারের (বাংলাদেশের) নাইট্যংপাড়া, চৌধুরীপাড়া, জালিয়াপাড়া, কায়ুকখালীয়পাড়া, পল্লানপাড়া, কুলালপাড়া, খানকার ডেইলসহ কয়েকটি এলাকা কেঁপে ওঠে।
“ধারণা করা হচ্ছে, এবার হামলা হচ্ছে, মংডু টাউনশিপের কাদিরবিল, মংনিপাড়া ও সুদাপাড়া এলাকায়”, বলেন এই জনপ্রতিনিধি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, “ঈদের দিন কোনো ধরনের শব্দ পাওয়া যায়নি। শান্ত ছিল সীমান্ত এলাকা। মঙ্গলবার থেকে আবারও নাফ নদীর তীরে টেকনাফ পৌরসভা, সদর ও সাবরাং এলাকার বাসিন্দারা কিছুক্ষণ পর থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাচ্ছেন। এতে করে স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কগ্রস্ত।”
তিনি বলেন, “বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে মিয়ানমারের ওপার থেকে। এতে করে পুরো টেকনাফ কেঁপে ওঠছে। রাখাইনে বিস্ফোরণের ঘটনায় টেকনাফ সীমান্তের প্রতিটি গ্রামে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। বর্তমানে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।”
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাখাইনের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো ধরনের অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: