২০১০-১১ অর্থবছরে ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
Published : 21 Nov 2024, 04:14 PM
শরীয়তপুরে জাজিরায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের আওতায় নির্মিত নদী রক্ষা বাঁধের ১০০ মিটার অংশ ধসে পড়েছে। ভাঙনে নদীতে পড়ে গেছে স্থানীয় একটি মসজিদ। আরও বড় ধরনের ভাঙনের শঙ্কায় আছেন নদী পাড়ের মানুষ।
গত ৩ নভেম্বর থেকে বাঁধের পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট এলাকার ধস শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাঁধটির প্রায় ১০০ মিটার নদীতে ধসে পড়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন খান।
ভাঙনের ফলে কংক্রিটের সিসি ব্লকগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। আশপাশে ফাটল দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতু থেকে মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলমখার কান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। এতে ব্যয় হয় ১১০ কোটি টাকা।
স্থানীয় বাসিন্দা আপন হোসেন বলেন, “বাঁধটি নির্মাণের পর এলাকার মানুষ ভেবেছিল নদী ভাঙন থেকে মুক্তি পেয়েছে। তবে একটি চক্র রাতের আধারে বালু উত্তোলন করায় বাঁধে ধস নেমেছে।
“অতি দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পুরো এলাকা আবারও নদীতে বিলীন হবে। আমরা চাই বাঁধ দ্রুত সংস্কার করা হোক।”
স্থানীয় আমেনা বেগম, রেনু বেগম বলেন, অনেক আগে এ এলাকায় ভাঙন শুরু হলে তারা এখান থেকে সরে যান। পরে বাঁধ নির্মাণ হলে আবার চলে আসেন। এখন আবার বাঁধে নতুন করে ধস নেমেছে। এখন যদি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে আবার তাদের চলে যেতে হবে।
চুন্নু মাঝি নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, “বাঁধ নির্মাণের পর আমরা সবাই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছি। এখন যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে মনে হয় আর থাকা হবে না। আমরা যাতে এখানে বসবাস করতে পারি, সেজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।”
পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন খান বলেন, হঠাৎ করে বেড়িবাঁধের একটি অংশ ভেঙে যায়। ফলে পদ্মা সেতু সংলগ্ন ওসিমদ্দি কান্দি, পাইনপাড়া, আলম খার কান্দিসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজার হুমকির সম্মুখীন। এছাড়া এই ভাঙন পদ্মা সেতুর জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ।
পাশাপাশি নদীর ওপারে পাইনপাড়া আহম্মদ মাঝি কান্দি এলাকায় ‘মফিজুল উলূম জামে মসজিদটিও’ ভাঙনের শিকার হয়েছে। মসজিদটি নদীর ভেতরে পড়ে রয়েছে।
তবে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড এখন পর্যন্ত ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “দ্রুত সময়ের মধ্যে ধসে যাওয়া বাঁধ সংস্কার করা না হলে হুমকি মুখে পড়বে নদী পাড়ের অন্তত পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুমন বণিক বলেন, “ভাঙন কবলিত স্থান পরিদর্শন করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।”