২০২০ সালের ১১ নভেম্বর কুমিল্লা নগরীর চৌয়ারায় যুবলীগকর্মী জিল্লুর রহমান চৌধুরীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
Published : 14 Feb 2023, 08:49 PM
খুনের দুই বছরের বেশি সময় পর কুমিল্লার যুবলীগকর্মী জিল্লুর রহমান চৌধুরী ওরফে গোলাম জিলানী হত্যা মামলায় অভিয্গেপত্র দিয়েছে পিবিআই।
কুমিল্লা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারমো.মিজানুররহমান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক বিপুল চন্দ্র দেবনাথ এ কথা জানান।
কুমিল্লা নগরীর চাঞ্চল্যকর ওই যুবলীগ কর্মীকে দিনদুপুরে খুনের মামলার অভিযোগপত্রে দশজনকে আসামি করা হয়েছে। এতে খুনের পরিকল্পনাকারী হিসেবে নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের টানা দুইবারের নির্বাচিত বর্তমান কাউন্সিলরমো.আবুলহাসানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। হাসান ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির পদে রয়েছেন।
এর আগে খুনের চার বছর পর গত ২৩ জানুয়ারি ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। সেখানে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুস সাত্তারসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। এই অভিযোগপত্রও দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।
২০২০সালের ১১ নভেম্বর সকালে নগরীর চৌয়ারা এলাকায় যুবলীগকর্মী জিল্লুর রহমান চৌধুরীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে একদল হামলাকারী। পরদিন তার ভাই ইমরান হোসেন চৌধুরী কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও১০/১৫জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে থানা পুলিশ।২০২১সালের ২ ডিসেম্বর তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঘটনার আগেরদিন রাতে কাউন্সিলর হাসানের বাড়িতে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেই বৈঠকে পরিকল্পনাকারী ছাড়া বাকি ৯ জনই উপস্থিত ছিলেন। নগরীর চৌয়ারা গরু বাজার নিয়ন্ত্রণ ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ছিল খুনের কারণ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক বিপুল চন্দ্র দেবনাথ জানান, মামলার এজাহার-বহির্ভূত আসামি আরমান হোসেনকে গত বছরের ১৩ সেপ্টম্বর কুমিল্লা নগরীর চৌয়ারা বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন কুমিল্লার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আরমান। খুনের সময় পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন আরমান। আর বাকিরা খুনে অংশ নেন। হাসানের বাড়িতে বৈঠক ও তার পরিকল্পনায় খুনের কথা আরমান জবানবন্দিতে বলেছেন।
অভিযোগপত্রে নাম আসা অপর আসামিরা হলেন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মেহেদী হাসান, নাছিম, মারুফ হোসেন, ইমরান হোসেন, তুষার, সাইফুল ইসলাম, মাবুল হোসেন এবং এজাহার-বহির্ভূত এমদাদ হোসেন।
বিপুল চন্দ্র দেবনাথ আরও জানান, এ খুনের মামলায় অভিযোগপত্রে প্রায় সবাই গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিনে আছেন। কাউন্সিলর হাসানও প্রায় ৬ মাস কারাগারে ছিলেন। এরপর জামিনে মুক্তি পান। গত ৯ ফেব্রুয়ারি স্বাক্ষর হওয়া অভিযোগপত্র এরই মধ্যে আদালতে দাখিল করা হয়েছে।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারমো.মিজানুররহমান বলেন, “আমরা প্রতিটি মামলার তদন্তই গুরুত্বসহকারে করি। জিল্লুর হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমাদের অনেক গভীরে গিয়ে তদন্ত করতে হয়েছে। দীর্ঘ চেষ্টা ও তদন্তের পর শেষ পর্যন্ত আমরা হত্যার নেপথ্যের কারণ ও জড়িতদের শনাক্ত করতে পেরেছি। আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।”
তবে এ খুনের আসামি কাউন্সিলর হাসান খুনের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জিল্লুর আর আমার ওয়ার্ড আলাদা। তিনি সম্পর্কে আমার মামা। আমি কেন তাকে খুনের পরিকল্পনা করব? এগুলো পুরোপুরি ষড়যন্ত্র। আমার সঙ্গে জিল্লুরের এমন কোনো বিরোধ ছিলো না যে তাকে খুন করতে হবে। আমাকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে।
“আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়া আরমান জামিনে এসে আমাকে বলেছে তাকে অমানবিক নির্যাতন করে এমন স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে। আর গরু বাজার আমি নিয়ন্ত্রণ করি না, ইজারাও আমার নামে না। এসব বানেয়ারট কথা।”
কুমিল্লার ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হত্যার অভিযোগপত্রে কাউন্সিলর সাত্তার