পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীতে মহালয়ার দিন নৌকাডুবির ঘটনায় ঘাটের ইজারাদার ও এক মাঝিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে বোদার মাড়েয়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গ্রেপ্তারা হলেন ইজারাদার আব্দুল জব্বার ও বাচ্চু মিয়া।
তিন আসামির আরেকজন হলেন রবিউল ইসলাম। তিনি পলাতক রয়েছেন।
বোদা থানার ওসি সুজয় কুমার রায় জেলা প্রশাসনের বরাতে জানান, করতোয়ার আউলিয়া ঘাটে মহালয়ার দিন নৌকাডুবির ঘটনায় জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
“জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদনে নৌকাডুবির কারণ হিসেবে ইজারাদার আব্দুল জব্বারের গাফিলতি, নৌকার অদক্ষ চালক (মাঝি) বাচ্চু মিয়া ও রবিউল ইসলামকে দায়ী করা হয়।”
এছাড়া ধর্মীয় কুসংস্কার, ধর্মীয় অনুভূতি, অসচেতনতা, অতিরিক্ত যাত্রী, নৌকায় ত্রুটিসহ বেশ কিছু কারণও প্রতিবেদনে চিহ্নিত করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ওসি জানান, ঘটনার পর পৃথক তিনটি তদন্ত প্রতিবেদন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়।
এরপর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের মুখ্য পরিদর্শক মো. সফিকুর রহমান বাদী হয়ে ঘাটের ইজারাদার আব্দুল জব্বার, নৌকার চালক বাচ্চু মিয়া এবং রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে নৌ-আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন; এরপর তাদের বিরুদ্ধে বোদা থানয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠানো হয় বলেও তিনি জানান।
মামলার বিষয়ে ওসি বলেন, “এই মামলার বিষয়ে আমরা তেমন কিছু জানি না। নৌ অধিদপ্তর আদালত থেকে আমাদের কাছে আসামিদের ওয়ারেন্ট আসলে আমরা দুইজনকে গ্রেপ্তার করি এবং আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠাই।”
মামলাটি নৌ-অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তদন্ত এবং নৌ-আদালতে বিচাকার্য পরিচালিত হচ্ছে।
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সনাতন ধর্মালম্বীদের মহালয়া উৎসবে যোগ দিতে শিশুসহ স্থানীয় কয়েকশ নারী পুরুষ শ্রী শ্রী বদ্বেশ্বরী মন্দিরে যাচ্ছিলেন। বোদার করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে নৌকাডুবির ঘটনায় নারী, পুরুষ, শিশুসহ ৭১ জন নিখোঁজ হন। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা এবং নীলফামারি, দিনাজপুর ও রংপুর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যসহ ১২টি ডুবুরি দল উদ্ধার কাজ শুরু করে।
ঘটনার ৪৯ দিনে নদীর বালু ও পানি থেকে একজনের মরদেহসহ সর্বশেষ ৭১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে সুরেন্দ্রনাথ বর্মন (৬৫) নামে একজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।