চীনা রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল টেকনাফের কেরুণতলীর প্রত্যাবাসন ক্যাম্প আসেন বলে জানান সিআইসি আব্দুল হান্নান।
Published : 20 May 2023, 10:47 PM
মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার আগে আশ্রয় শিবিরের রোহিঙ্গারা সবশেষ সেখানে থাকবেন সেই ক্যাম্প (ঘাট) পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
শনিবার দুপুরে চীনা রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল টেকনাফের কেরুণতলীর প্রত্যাবাসন ক্যাম্প ঘুরে দেখেন বলে জানান নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২৫ এর ক্যাম্প ইনচার্জ (সিআইসি) আব্দুল হান্নান।
তিনি বলেন, “চীনা রাষ্ট্রদূতের একটি দল কেরুনতলী প্রত্যাবাসন ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। পরে প্রতিনিধি দল দুপুর দেড়টার দিকে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়ক হয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়না দেন।”
এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত ওয়েন ইয়াও সঙ্গে জিঝিয়া ফেং, চেন জিং, ইয়াও, অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার খালিদ হোসেনসহ সরকারের অন্য কর্মকর্তারা ছিলেন।
এদিকে, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চলতি মাসে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশে আসার কথা ছিল। তবে ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে এ সফর পিছিয়ে দিয়েছে তারা।
যদিও এর আগে ৫ মে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি ও রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা রাখাইন রাজ্য সফর করেছিলেন।
নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের মনোবল বাড়ানোর জন্য এ মাসেই মিয়ানমার তাদের প্রতিনিধি দল পাঠানোর কথা বলেছিল।
এর আগে গত ১৫ মার্চ টেকনাফ হয়ে বাংলাদেশে আসেন মিয়ানমার সরকারের ১৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। তারা বাংলাদেশের দেওয়া আশ্রিত ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের তালিকা যাছাই-বাছাই করেন।
প্রতিনিধিদলটি টানা সাতদিন টেকনাফের স্থলবন্দর রেস্ট হাউজে অবস্থান করে বাংলাদেশে আশ্রিত ১৪৭ রোহিঙ্গা পরিবারের মোট ৪৮৬ জন রোহিঙ্গার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং তাদের দেওয়া বক্তব্য রেকর্ড করেন।
২২ মার্চ সকালে প্রতিনিধিদলটি নাফ নদী পার হয়ে মিয়ানমারে ফিরে যায়।
ওই সময় মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যাদের প্রত্যাবাসন করা হবে সেই সব রোহিঙ্গা যেন আগে থেকে রাখাইনের সার্বিক পরিবেশ স্বচক্ষে দেখে আসতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
আরআরআরসি কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল শুরু হওয়ার পর ২০১৮ সালে বাংলাদেশ মিয়ানমারের কাছে প্রত্যাবাসনের জন্য আট লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকায় দিয়েছিল। সে তালিকা যাছাই-বাছাই করে মাত্র ৬৮ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা চূড়ান্ত করে তা বাংলাদেশের কাছে ফেরত পাঠিয়েছিল মিয়ানমার।
এর আগে ২০১৮ সালের ১৫ই নভেম্বরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি। এরপর ২০১৯ সালে অগাস্টে চীনের তরফ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর আরেকটি উদ্যোগ নেওয়া হয়।
কিন্তু নাগরিকত্বের বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় যেতে চাননি। এখন আবার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চীনের তরফ থেকে এই তৃতীয় দফার উদ্যোগ নেওয়া হল।