আহতদের পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
Published : 04 Nov 2024, 11:21 PM
ময়মনসিংহে ফিলিং স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দুই জন হয়েছে। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়।
এতে নিহতরা হলেন, প্রাইভেট কার চালক সদর উপজেলার কিসমত গ্রামের বাসিন্দা জালাল উদ্দিনের ছেলে হিমেল মুন্সী (২৭) ও রহমতপুর এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে আব্দুল কুদ্দুস (২৯)।
সোমবার সন্ধ্যার পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল কুদ্দুস মারা যান।
এ ঘটনায় সাত আহতের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
তাদের মধ্যে পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকি দুইজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে হাসপাতালটির পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. শফিক উদ্দিন জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বুলবুল আহম্মেদ বলেন, আড়াইটার দিকে একটি প্রাইভেট কার গ্যাস নিতে নগরীর রহমতপুর বাইপাস সড়ক এলাকায় আজাহার সিএনজি ও পেট্রোলিয়াম ফিলিং অ্যান্ড কনভারশন সেন্টারে ঢুকে। এ সময় পাশেই একটি লড়ি থেকে গ্যাস নামানো হচ্ছিল। সেখানের লিকেজ থেকে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে।
এতে প্রাইভেট কারের চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান।
গ্যাস নিতে অপেক্ষারত তিনটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা পুড়ে যায়। পরে ফিলিং স্টেশনের পাশে তিনটি দোকানেও আগুন লাগে।
বুলবুল আহম্মেদ বলেন, “ঘটনায় ৮-১০ জনকে প্রশাসনের সহায়তায় উদ্ধার করে আমরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই।”
বসির উদ্দিন নামে এক শ্রমিক নেতা বলেন, “নিহত প্রাইভেট কারের চালক আমাদের এলাকার ছোট ভাই। সব সময় তার সাথে আমাদের ওঠাবসা। আজকে চোখের সামনে তার মৃত্যু কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছি না।”
ময়মনসিংহ জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, “ঢাকা থেকে আনা একটি ট্যাংক লড়ি থেকে এলপিজি গ্যাস নামানো হচ্ছিল। একটু দূরেই একটি প্রাইভেট কারে গ্যাস দেওয়া হচ্ছিল। তখন গ্যাস লিকেজ থেকে হঠাৎ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে সাতটি গাড়ি ভস্মিভূত হয়ে যায়। এর মধ্যে একটি প্রাইভেট কার, তিনটি সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ অন্য গাড়ি রয়েছে।
এ সময় ভস্মীভূত প্রাইভেট কার থেকে হিমেল মুন্সীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে চারটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিতাস গ্যাস ময়মনসিংহের উপমহাব্যবস্থাপক সুরঞ্জিত কুমার দে বলেন, “লড়ি থেকে এলপিজি আনলোড করার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। দুর্ঘটনাটি ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের মেইন গ্যাস লাইনটি বন্ধ করে দিই। আগুনে গাড়িতে গ্যাস দেওয়ার দুটি ডিসপেনসার পুড়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওই এলাকায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা হয়।”
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহের ডিসি মো. মুফিদুল আলম, এসপি আজিজুল ইসলাম।
আজিজুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরপরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি পুলিশ কাজ করেছে। আহতদের উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা হয়েছে।
ডিসি মুফিদুল আলম বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে অতিরিক্ত জেলা হাকিম লুৎফুন্নাহারকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুন: