মঙ্গলবার সকাল থেকে ছেলেদের তিনটি হলে বরাদ্দ করা আসনে ছাত্ররা উঠছেন বলে জানান ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ এছাক মিয়া।
Published : 15 Oct 2024, 08:41 PM
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ বছর পর আবাসিক হলের সিট বণ্টনে দলীয় দখলদারিত্বের অবসান ঘটেছে। ৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর প্রশাসনের দেওয়া আসন বণ্টনের ভিত্তিতে আবাসিক হলে উঠছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে ছেলেদের তিনটি হলে বরাদ্দ করা আসনে ছাত্ররা উঠছেন বলে জানান ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ এছাক মিয়া।
এ উপলক্ষে সোমবার ছেলেদের হলগুলোর ফটক নানা ফুল ও রঙিন আলোয় সজ্জিত করে কর্তৃপক্ষ।
৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর হলের আসন বণ্টনের বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের দাবি ওঠে। এর আগে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের অধীনে হলের আসন বণ্টন হত বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।
ফলে ছাত্র সংগঠনের কর্মী তালিকায় নাম লিখিয়ে হলে উঠতে হত শিক্ষার্থীদের।
হলগুলোতে ছাত্রদের মাঝে সুষ্ঠুভাবে আসন বণ্টনের জন্য ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় নতুন নীতিমালা পাশ হয়। নীতিমালার আলোকে ৬০ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে এবং ৪০ শতাংশ আসন বিশেষ প্রয়োজনে (দরিদ্র, প্রতিবন্ধী, সাংবাদিক, খেলোয়াড় প্রভৃতি) বণ্টনের সিদ্ধান্ত হয়।
এরপর শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫ অক্টোবর আসন বরাদ্দ দেয় হল নীতিমালা প্রণয়ন কমিটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ বর্ষের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে নয় হাজার ১২৬ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন। ছাত্রদের তিনটি ও ছাত্রীদের তিনটি হল মিলে আসন সংখ্যা রয়েছে প্রায় তিন হাজার। এতে মাত্র ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থী হলে আসন পেয়ে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের বিশাল এ আবাসন সংকট কাটানোর জন্য প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দ্রুত একটি হল নির্মাণের আশ্বাসও দিয়েছেন।
নতুন করে আসন বণ্টনের বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, “এতদিন হলগুলোতে দলীয় অধীনে থাকতে হতো। অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজনীতি মিছিল-মিটিংয়ে যেতে হত। এসব দলীয় সিটে জুনিয়র থাকা অবস্থায় অনেক র্যাগিংয়ের শিকার হতে হয়েছে আমাদের। এমনকি টার্ম টেস্টের আগের রাতেও বাধ্যতামূলক গ্রুপের মিটিংয়ে থাকতে হয়েছে।
“এখন হলের এতসব কালো দিনগুলো কেটে নতুন দিন এসেছে। এখন নিজের স্বাধীনমত হলে থাকতে পারব। এজন্য মনটা অনেক উৎফুল্ল লাগছে।”
ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক মো. এছাক মিয়া বলেন, “নীতিমালার আলোকে হলের আসন বণ্টন হয়েছে। ৮০ শতাংশ আসন দ্বিতীয় বর্ষ থেকে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বণ্টন হয়েছে। এ ছাড়া আসন বণ্টনে বিভাগভিত্তিক শিক্ষার্থীদের আনুপাতিক হারে বণ্টন করা হয়েছে।
“হলে যাতে আর কোনো দখলদারিত্ব না থাকে সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক ও কঠোর অবস্থানে রয়েছি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবিও এটি।”