Published : 22 Aug 2024, 02:22 AM
পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতিসহ ৭ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বিকালে ঝড়-বৃষ্টির উপেক্ষা করে বান্দরবান শহরের পুরাতন রাজবাড়ী মাঠ থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী আদিবাসী ছাত্র সমাজ’ ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
কয়েকটি উপজেলা থেকে আসা শিক্ষার্থীরাও মিছিলে যোগ দেন।
শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লেকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাব চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
এতে বক্তব্য দেন শিক্ষার্থী পুপুসিং মারমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি জন ত্রিপুরা, বম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জেমস লালথারঙাক, মংচশৈ মারমা, আদিবাসী ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ক অং মারমা ও পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন ভয়েসের সাচিংনু মারমা।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সারা দেশে শিক্ষার্থীরা শহীদ স্মরণে বিভিন্ন দেয়ালে চিত্র আঁকা শুরু করেন। পাহাড়েও ছাত্র আন্দোলনে শহীদ স্মরণের পাশাপাশি নিখোঁজ হওয়া কল্পনা চাকমাকে স্মরণ করে গ্রাফিতি আঁকা হয়।
তাদের অভিযোগ, বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গ্রাফিতিগুলো মুছে দেন। কোথাও কোথাও গ্রাফিতি আঁকায় বাধা দেওয়ারও অভিযোগ করেন বক্তারা।
আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, পার্বত্য চুক্তির ২৭ বছরও চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে দিন দিন ভূমি বেদখল হচ্ছে; পাহাড়ে অস্থিরতা বাড়ছে।
পার্বত্য শাসনবিধি ১৯০০ সাল আইনকে বাতিল করার ষড়যন্ত্র করে পাহাড়িদের আরও কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে অভিযোগ করে তারা বলেন, বিভিন্ন কৌশলে পাহাড়িদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে।
এছাড়া কেএনএফের ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ‘নিরীহ বমদের’ মুক্তির দাবিও জানান বক্তারা।
সমাবেশে ‘বৈষম্যবিরোধী আদিবাসী ছাত্র সমাজ’ এর পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
দাবিগুলোর মধ্যে ছিল- পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন, আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, গ্রাফিতি আঁকার স্বাধীনতা, গ্রেপ্তার নিরীহ বম নারী-শিশু ও পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজবন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি, প্রথাগত আইনে আদিবাসীদের ভূমির অধিকার নিশ্চিত করা, পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ সাল আইন বাতিলের ষড়যন্ত্র বন্ধ করা এবং পর্যটনের নামে ভূমি বেদখল বন্ধ করা।
সমাবেশ শেষ করে ‘পুরাতন রাজার মাঠে’ আয়োজন করা হয় প্রতিবাদী গানের অনুষ্ঠান। সেখানে বিভিন্ন জাতিসত্তার ভাষায় জাগরণের গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা।