“একের পর এক অপহরণের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এখন সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করতে শুরু করেছে।”
Published : 02 May 2024, 04:31 PM
কক্সবাজারে টেকনাফ উপজেলায় অপহরণের সাত ঘণ্টা পর একই পরিবারের তিন কৃষককে ‘সাঁড়াশি অভিযান’ চালিয়ে উদ্ধার করে এনেছে এলাকাবাসী।
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, তার ইউনিয়নের মোছনী এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৩টার দিকে অপহরণ করা হয় তিনজনকে। পরে ওই এলাকার পাশের একটি পাহাড় থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার কৃষকরা হলেন- হ্নীলা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মোছনী গ্রামের গ্রামের আশরাফ জামানের ছেলে নীর আহমেদ (৬০), হাবিবুর রহমান (৫৫) ও হাবিবুরের ছেলে নুর ফয়েজ (১৩)।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, “প্রতিদিনের মত নীর আহমেদ, হাবিবুর রহমান ও তার শিশু ছেলে নুর ফয়েজ মোছনী এলাকায় নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিম পাহাড়ের পাদদেশে ধানক্ষেত পাহারা দিচ্ছিলেন। এ সময় একদল ব্যক্তি এসে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে।
“খবর পেয়ে বিক্ষুব্ধ শত শত এলাকাবাসী পুরো পাহাড় ঘিরে লাঠি হাতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে অপহরণকারি চক্রের সদস্যরা কৌশলে পালিয়ে যায়। এরপর সকাল ১০ টার দিকে তিনজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।”
হ্নীলার চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, “একের পর এক অপহরণের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এখন সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করতে শুরু করেছে। এর জের ধরেই পাহাড়ে এই অভিযান চালিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।”
এলাকাবাসীকে অপহরণসহ সকল অপরাধ রোধে সংঘবদ্ধ প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান এ জনপ্রতিনিধি।
টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, “অপহরণের বিষয়টি জেনে এলাকাবাসী পুলিশের যাওয়ার আগে পাহাড় ঘিরে রাখে। এর মধ্যে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। উদ্ধার তিনজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।”
পুলিশ ইতোমধ্যে অপহরণ রোধে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে জানিয়ে ওসি বলেন, গত এক সপ্তাহে অপহরণে জড়িত অন্তত দশজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এ নিয়ে গত ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ২ মে পর্যন্ত টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১২৪ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৬৬ জন স্থানীয় বাসিন্দা; বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক।
অপহৃত পরিবারের সদস্যরা বলছেন, অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫৩ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে।