মাদারীপুরে রাজীব হত্যায় ২৩ জনের ফাঁসির রায়

রায় ঘোষণার সময় আদালতে ২২ আসামি উপস্থিত ছিলেন।

মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2023, 11:29 AM
Updated : 21 March 2023, 11:29 AM

মাদারীপুর পৌর শহরে এক দশক আগের রাজীব সরদার হত্যা মামলায় ২৩ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস মঙ্গলবার ২২ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন বলে জানান আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সিদ্দিকুর রহমান সিং।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মাদারীপুর পৌরসভার বাসিন্দা আব্দুল হাই হাওলাদার (৫৫), আব্দুল হক হাওলাদার (৫৮), জহিরুল হাওলাদার (৩৬), রাসেল হাওলাদার (৩৮), রাজা হাওলাদার (৫০), কালু হাওলাদার (৫৫), সোবহান হাওলাদার (৫০) তুষার শরীফ (৩০), ইউসুপ হাওলাদার (৪০), আজিজুল হাওলাদার (৪৮), রহিম হাওলাদার (৫২), রেজাউল হাওলাদার (৫৪), শামীম হাওলাদার (৩০), আহাদ হাওলাদার (২৯), দলিল উদ্দিন হাওলাদার (৫২), অলিল উদ্দিন হাওলাদার (৫৫), জসিম হাওলাদার (৩৮), মনির হাওলাদার (৩৭), সুমন শরীফ (৩২), সাগর শরীফ (৩০), হাফিজুল কাজী (৩৮), কালু কাজী (৪২), আলাউদ্দিন কাজী (৩০)।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- সেকেন হাওলাদার (৫০), উজ্জ্বল হাওলাদার (৪২), জামাল হাওলাদার (৪৮), রুবেল হাওলাদার (৩২), নুরুল আমিন হাওলাদার (৫৩) ও বাকী বিল্লাহ হাওলাদার (৫৮)।

আইনজীবী বলেন, রাজীব সরদারের (২৫) পৈত্রিক বাড়ি কালকিনি উপজেলায়। ছোটবেলায় তার মা মারা যান। তারপর বাবা আরেকটি বিয়ে করেন। তখন থেকেই তিনি সদর উপজেলার হরিকুমারিয়া এলাকায় তার মামাবাড়ি থাকতেন। তারাই তাকে বড় করেছেন।

২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৮টায় রাজীব মামা আলী হাওলাদারের নার্সারিতে কাজ করে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় পূর্ব বিরোধের জের ধরে হরিকুমারিয়া এলাকায় তাকে কুপিয়ে ফেলে যায় আসামিরা।

পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। পথে রাজবাড়ী মোড়ে তিনি মারা যান।

এ ঘটনার তিন দিন পর আলী হাওলাদার বাদী হয়ে ৪৭ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সদর থানার এসআই রাজীব হোসেন তদন্তের পর ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর ৩৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

এরপর আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। রায় ঘোষণার সময় আদালতে ২২ আসামি উপস্থিত ছিলেন। বিচার চলাকালে তিন আসামি মারা গেছেন। চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

এ মামলায় পলাতক সাত সাজাপ্রাপ্তের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছে বলে জানান আইনজীবী।

তিনি আরও বলেন, আদালত যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ছয় আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে।

সিদ্দিকুর রহমান সিং আরও বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। মামার সঙ্গে বিরোধের জেরে ভাগ্নেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট।”