ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে এ জেলায় ২১৬ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ হয়েছে।
Published : 11 Feb 2024, 11:07 PM
পহেলা ফাল্গুন, ভালবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে ঝিনাইদহ সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলায় পাইকারি বাজারে জমে উঠেছে ফুলের কেনা-বেচা।
সরেজমিনে সদর উপজেলার গান্না ও কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা পাইকারি বাজারে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
আশির দশকে যশোরের গদখালী এলাকায় শুধু রজনীগন্ধার চাষ হত। ফুল চাষের শুরু পানিসরা গ্রামের শের অলির হাত ধরে। ভালো লাভ হওয়ায় চাষিরা ফুল চাষে এগিয়ে আসেন। ধীরে ধীরে ফুল চাষের প্রসার ঘটে।
এরপর ঝিনাইদহেও বিশেষ করে গাঁদা ফুল চাষের প্রসার ঘটে। বর্তমানে নানা জাতের গোলাপ, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা ও লিলিয়াম ফুলের চাষ হচ্ছে।
চাষিরা ক্রেতার চাহিদা মত নতুন নতুন জাতের ফুলের চাষ করছেন। বড়, মাঝারি ও ক্ষুদ্র খামারে ফুল চাষ করছেন চাষিরা। মোটা টাকা বিনিয়োগ করে বড় বড় শেডেও ফুল চাষ করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ২১৬ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে।
ফুল চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন সারা বছর ধরে ফুলের চাহিদা থাকে। শহর এমনকি গ্রামের বাজারেও ফুলের দোকান গড়ে উঠেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে ফুলের চাহিদা বেশি হয়।
ঝিনাইদহের সদর উপজেলার গান্না ফুল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে চাষিরা মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল ও ভ্যানে করে ফুল নিয়ে হাটে আসছেন। ব্যাপারীরা ফুল কিনে স্তুপ করে রাখছেন।
গান্না ফুল বাজারের সাধারণ সম্পাদক ফুলচাষি নজরুল ইসলাম জানান, তিনি ৫ বিঘা জমিতে ফুল চাষ করেছেন। আগে দাম কম ছিল। এখন দাম চড়েছে। প্রতি ঝোপ্পা গাঁদা (এক হাজার পিস) ফুলের দাম ৬০-৭০ টাকায় নেমে গিয়েছিল। রোববার সেটি বিক্রি হয় ৪০০ টাকা দরে।
এ ছাড়া গোলাপ প্রতিটি ৫০ টাকা, জারবেরা প্রতিটি ১৫ টাকা ও চন্দ্রমল্লিকা প্রতিটি আড়াই থেকে তিন টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এ বাজারে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার ফুল কেনা-বেচা হচ্ছে। এবার ফুলের দাম ভালো।
ফুলচাষি আসলাম অলি বলেন, “ফুলের দাম কম ছিল। ভালবাসা দিবস, পহেলা ফাল্গুন ও ২১ ফেব্রুয়ারি সামনে রেখে দাম চড়েছে। বালিয়াডাঙ্গা ফুল বাজারেও প্রচুর ফুল উঠছে।”
কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রামের বড় ফুলচাষি টিপু সুলতান বলেন, মোটা পুঁজি বিনিয়োগ করে ফুল চাষ করছেন। মাঠের ভেতর বড় বড় শেডে ফুল চাষ করেন। বাজার এখন চাঙ্গা। চাহিদাও প্রচুর।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজগর আলি বলেন, জেলার সদর, কালীগঞ্জ, মহেশপুর ও কোটচাঁপুর উপজেলায় ফুল অর্থকরী ফসলের রূপ নিয়েছে। চাষও বাড়ছে। এবার ফুলের উৎপাদন ও দাম ভালো। চাষিরা লাভবান হচ্ছে।