সিলেটে ফের বন্যা

টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে চলতি মৌসুমে তৃতীয় দফা বন্যার মুখে পড়েছে সিলেট মহানগরীসহ পাঁচ উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2022, 07:35 AM
Updated : 16 June 2022, 09:23 AM

এর আগে গত এপ্রিলে সিলেটের নিম্নাঞ্চলে অসময়ে বন্যা দেখা দেয়। এরপর মে মাসের মাঝামাঝিতে সিলেটে ১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়। এই রেশ না কাটতেই আবারও বন্যার কবলে পড়ল সিলেটবাসী।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর বেলা ১২টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার উপরে রয়েছে সারি নদীর পানি। পানির উচ্চতা বেড়েছে কুশিয়ারা ও লোভা নদীরও। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৩ সেন্টিমিটার উপরে বইছে।

পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পানি বাড়ছে জানিয়ে আসিফ বলেন, সিলেট নগরীর অন্তত ১০টি এলাকা ছাড়াও জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও সদর উপজেলার অন্তত ৩ শতাধিক গ্রাম এরই মধ্যে প্লাবিত হয়েছে।

সুরমা নদী উপচে পানি প্রবেশ করেছে নগরীর তালতলা, জামতলা, সোবহানীঘাট, তেরোরতন, উপশহর, কালীঘাট,মহাজনপট্টি, মাছিমপুর ও  ছড়ারপাড়সহ বিভিন্ন এলাকায়। বন্যায় গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এছাড়া উপজেলার সদর, পূর্ব ও পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলং, পূর্ব ও পশ্চিম আলীর গাও, রুস্তমপুর, তোয়াকুল, লেংগুড়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে জানান পাউবির প্রকৌশলী।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান জানান, উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকায় ৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।

কানাইঘাট পৌর শহরসহ উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ও পশ্চিম, চতুল, সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে। সীমান্তবর্তী  উপজেলা জকিগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলোতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজারো মানুষ।

বন্যায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১৩৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে ছয়টি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলা পরিষদ, থানাসহ একাধিক সরকারি-বেসরকারি কার্যালয় এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং বলেন, বন্যায় উপজেলার বেশিরভাগ এলাকাই প্লাবিত হয়েছে। বাসাবাড়ি, রাস্তাঘাট এমনকি সরকারি অফিসেও পানি উঠেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন আন্তরিক চেষ্টা চালাচ্ছে। উপজেলায় ৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

সিলেট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, পানিবন্দি মানুষের জন্য ৪৪৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বন্যাকবলিতদের সহায়তায় বুধবার ২৯৮ টন চালও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।