নীলফামারীতে লকডাউন উপেক্ষা করে মানুষের বেপরোয়া চলাচলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা করা হচ্ছে।
Published : 12 Jul 2021, 08:58 PM
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সোমবারের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩১০টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৯ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে একজনের।
পহেলা জুলাই থেকে ১২ দিনে জেলায় ২ হাজার ৬৫০টি নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৫৯৬ জনের। এ সময় মারা গেছে সাত জন।
অথচ আগের জুন মাসে এ জেলায় ৫ হাজার ৫৯৫টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হন ২৬৩ জন এবং মৃত্যু বরণ করেন একজন।
নীলফামারী সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর কবির বলছেন, চলতি জুলাই শনাক্ত ও মৃত্যুর হার অনেক বেশি। এ সময়ে শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২ শতাংশ।
কঠোর লকডাউন চললেও বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে মানুষজন। শপিংমল, মার্কেটের দোকান বন্ধ থাকলেও সাপ্তাহিক গরু-ছাগলের হাট খোলা। সেখানে নেই কোনো স্বাস্থ্যবিধির বালাই।
সোমবার জেলা সদরের টুপামারী ইউনিয়নের রামগঞ্জে গরু-ছাগলের হাটে সকাল ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতার উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, কারো মুখে নেই মাস্ক, কেউ মানছেন না স্বাস্থ্য বিধি। গাদাগাদি করে চলছে কেনা-বেচা।
আগের দিন শহরের মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠ এবং কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বসে নীলফামারী হাট, জলঢাকা উপজেলা শহরে জলঢাকা হাট এবং খুটামারী ইউনিয়নের টেঙ্গনমারী হাট বসে।
রামগঞ্জে হাটে গরু কিনতে আসেন জেলা শহরের শাহিপাড়া মহল্লার ইউনুস আলী (৪৫)।
তিনি বলেন, “বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এই হাটে এসেছি। স্বাস্থ্যবিধি আমার মুখে মাস্ক থাকলেও এ হাটে উপস্থিত ক্রেতা-বিক্রেতার প্রায় ৯৯ শতাংশর কেউ মুখে মাস্ক নেই। একে অপরের গা ঘেঁষে কেনা-বেচা করছেন।”
এ বিষয়ে কথা বললে রামগঞ্জ হাটের ইজারাদার জুলফিকার আলী ভূট্ট বলেন, গত ৮ জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিধি মেনে হাট বসানোর অনুমতি রয়েছে। সেই পত্রের সকল নির্দেশনা মেনে আমরা হাট বসিয়েছি।
তিনি জানান, ৪১ লাখ টাকায় হাট ইজারা নিয়েছেন। মাত্র ১৫টি হাট করতে পেরেছেন।
“করোবানিকে সামনে রেখে হাট বসানো না গেলে কীভাবে আমরা পুঁজি বাঁচাব।”
জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, লকডাউনের বিধি অনুযায়ী কোথাও গরুর হাট বসানো যাবে না। এরপরেও কোথাও গরুর হাট বসানোর অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। মোবাইল কোর্টের মাধ্যে তাদের জরিমানা করা হচ্ছে।
লকডাউনের বিধি অমান্য করে গত ১১ দিনে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৪৯১ জনকে ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা এবং ২০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।