“মুই ভাবিবার পাওনাই শেখের বেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোক জমিসহ ঘর দিবে। আজি ঘর পায়া মোর খুব আনন্দ লাগেছে। এলা মোক আর কাহো পরগাছা কবার পারিবে না।”
Published : 20 Jun 2021, 10:17 PM
জমির দলিলসহ ঘর পেয়ে কথাগুলো বলেছেন নীলফামারী সদরের খোকসাবাড়ী ইউনিয়নের রামকলা শাইলবাড়ীর হতদরিদ্র নারী রাবেয়া খাতুন (৫০)।
রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় ধাপে সাড়ে ৫৩ হাজার পরিবারকে দুই শতক জমিসহ সেমিপাকা ঘর প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
আবেগাপ্লুত রাবেয়া খাতুন বলেন, “মুই স্বপ্নেও কোনোদিন ভাবিবার পাওনাই নিজের জমি হইবে ও পাকা ঘর হইবে। ম্যানষের বাড়িত ঝির কাজ করি খাও। পাঁচটা ছাওয়া নিয়ে পরগাছার মতো ম্যানষের জায়গাত ঘর তুলি ছিনু। এলা মোক আর কাহো পরগাছা কবার পারিবে না।”
দশ বছর আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বিতারিত হয়েছিলেন রাবেয়া খাতুন। পাঁচ সন্তানসহ আশ্রয়হীন হয়ে এখানে ওখানে ভেসে বেড়িয়েছেন পরগাছার মতো।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়হীন এই নারী ও তার পাঁচ সন্তানের জন্য দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের রঙিন সেমিপাকা ঘর; সঙ্গে ওই ঘরের জমির দলিল।
প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিকতার পর দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী ঘরের চাবি ও জমির দলিল বুঝিয়ে দেন রাবেয়ার হাতে।
নীলফামারী জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) মো. বেলায়েত হোসেন জানান, জেলার ছয় উপজেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্দ পাওয়া গেছে এক হাজার ২৫০টি। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে নির্মাণ কাজ শেষে রোববার এক হাজার ১০টি হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৫০টি, ডোমারে ২০০টি, ডিমলায় ১৫০টি, জলঢাকায় ৩০০টি, কিশোরগঞ্জে ১৫০টি ও সৈয়দপুরে ৬০টি রয়েছে।
দুই শতাক খাস জমির ওপর নির্মিত এসব ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগও দেওয়া হয়েছে। জমির দলিল ও নামজারিসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের হাতে।
দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা ঘরে শৌচাগার, রান্না ঘরও রয়েছে।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, নীলফামারীর এক হাজার ১০টি পাকা ঘর অসহায় পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল প্রথম পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে জেলায় পাকা ঘর প্রদান করা হয় ৬৩৭ পরিবারকে।