দেশে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সার্বিক পরিস্থিতি বিচার করা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
Published : 09 Aug 2020, 09:14 PM
রোববার বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ যুগে খাদ্য নিরাপত্তা: বাংলাদেশ কি অদূর ভবিষ্যতে খাদ্য সংকটে পড়ছে?’ শীর্ষক অনলাইন সেমিনারে তিনি একথা বলেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কোভিড-১৯ কালীন চরম অনিশ্চিয়তায় ধান উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই।
“আমাদের দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ধান নির্ভর। সেজন্য দেশের বিভিন্ন স্থানের বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ, বাজার পর্যালোচনা, আপদকালীন সংকটের আশংকা এবং চালের রাজনৈতিক স্পর্শকাতর দিকসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিচার-বিবেচনার পরই চাল আমদানির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
সেমিনারে বিশেষ অতিথি খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “এবার সেকেন্ড টাইম যদি বন্যা না হয় তাহলে খাদ্যে আমাদের কষ্ট হবে না। আর যদি সেকেন্ড টাইম বন্যা এসে যায় তবে ন্যাশনাল সিকিউরিটি বাড়াতে চাল আমাদানির প্রয়োজন হতে পারে। এজন্য আমরা যাতে সর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রাখি, আর যাতে দেশে পেঁয়াজের মতো না হয়।
“চাল যদি আমদানি করতেই হয়, তবে আমদানির আগে প্রধানমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ব্যপক আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেব।”
এ ব্যাপারে হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “পেট ঠান্ডা থাকলেই মাথা ঠান্ডা। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। আগে কৃষকের স্বার্থ যেমন দেখতে হবে, তেমন ভোক্তাদের স্বার্থও আমাদের দেখতে হবে।”
কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে এই অনলাইন সেমিনারে মুখ্য আলোচক ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম।
এছাড়া আলোচক হিসেবে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লুৎফুল হাসান, খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর।
শাহজাহান কবীর বলেন, “অদূর ভবিষ্যতে দেশে খাদ্য সংকটের আশংকা নেই। যদিও খাদ্য বলতে শাক-সবজি, ফলমূল, প্রাণিজ উপাদানসহ বিভিন্ন উপকরণ বোঝায়, তথাপি আমাদের দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কথা উঠলে সর্বাগ্রে যে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় সেটি হলো চালের উৎপাদন ও মজুদ।”
বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব এবং বন্যার ক্ষয়ক্ষতি সত্বেও বর্তমানে দেশে চালের মজুদ যথেষ্ট আছে এবং সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সকলের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে বিগত বোরো মওসুমে কৃষকরা নিরাপদে বোরো ফসল ঘরে তুলতে পেরেছেন বলে তার ভাষ্য।
আগামী আমন ও বোরো মওসুমে দেশে চালের উৎপাদন ব্যাহত হবে না মন্ত্যব করে তিনি বলেন, “তাই এ নিয়ে অত্যধিক উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।”