শরীয়তপুরে একজনের পকেটে ইয়াবা দিয়ে চাঁদাবাজি করার অভিযোগ ওঠার পর এক পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
Published : 18 May 2020, 09:06 PM
এ ঘটনায় সোমবার সকালে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহারকৃত কনস্টেবল তরিকুল ইসলাম নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন।
ভোজেশ্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আমরা খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে তারিকুলকে উদ্ধার করি এবং শাহাদাতকে গ্রেপ্তার করেছি। এ ঘটনা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।”
এ ব্যাপারে নড়িয়া থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, স্থানীয় পুলিশের সোর্স মো. শাহাদাত হোসেন পথচারী সুলতান শেখের কাছে থেকে পুলিশের নাম করে চাদাঁবাজি করেছে। পরে ভোজেশ্বর ফাঁড়ির কনস্টেবল তরিকুল ইসলাম গিয়ে সোর্স-এর পক্ষ নেয়। এ কারণে পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
“পাশাপাশি কনেস্টেবলের বিরুদ্ধে বিভাগীর ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে এবং সোর্সকে আটক করা হয়েছে।”
তবে তাকে প্রত্যাহারের কারণ জানাতে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নড়িয়া সার্কেল এমএম মিজানুর রহমান বলেন, “তরিকুল ফাড়ির ইনচার্জকে না জানিয়ে [সেখানে] যাওয়ার কারণে ক্লোজ করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, শাহাদাত হোসেন নামে এক ইয়াবা ব্যবসায়ী ফোন করে কনস্টেল তরিকুল ইসলামকে বলে ‘একজন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটক করেছি। আপনি আসেন।’ সেখানে তরিকুল গিয়ে দেখে শাহাদাতই ব্যবসায়ী। এ কারণে শাহাদাতকে আটক করে।
ঘটনা শিকার সুলতান শেখ ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, রোববার সুলতান শেখ গোলার বাজার থেকে বাজার করে তার মেয়েকে নিয়ে রিকশায় তেলীপাড়া বাড়িতে ফিরছিলেন। রিকশাটি কিছুদূর যাওয়ার পর পুলিশের সোর্স শাহাদাত হোসেন সুলতান তার রিকশার গতিরোধ করে ১০০ টাকা চায়। এ সময় শাহাদাত সুলতানের পকেটে হাত দেয়। এরপর বলে ‘আপনার পকেটে ইয়াবা আছে।’ এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভোজেশ্বর পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল তরিকুল ইসলাম। কনেস্টেবল তরিকুল সুলতান শেখকে হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে ফতেজঙ্গপুর বাজারের পরিত্যক্ত এক ভাঙ্গারির দোকানে নিয়ে যান।
এরপর তার কাছে থেকে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চায়। এ সময় সুলতানের ছোট মেয়েকে একটি গাড়িতে করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এরপর সুলতান শেখ উপায়ান্ত না পেয়ে তার বাড়িতে স্ত্রীর কাছে ফোন করে ২০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলে। স্ত্রী খুকু মনি বেগম ‘তার কানের দুল বন্ধক রেখে সাত হাজার টাকা নিয়ে এসে কান্নাকাটি করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন দেখে পুলিশ সদস্য তারিকুল ইসলামকে আটক করে নড়িয়া থানা ও ভোজেশ্বর ফাড়িতে খবর দেয় বলে জানান তারা।
সুলতান শেখের স্ত্রী খুকুমনি বলেন, “পুলিশ অন্যায়ভাবে আমার স্বামীকে আটক করে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। আমি অনেক চেষ্টা করে ৭ সাত হাজার টাকা দিয়ে আমার স্বামীকে ছাড়িয়ে আনি।
পরে ফতেজংপুর বাজারের লোকজন জানতে পেরে পুলিশ সদস্যকে আটক করে নড়িয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে কনস্টেবল তরিকুল ইসলামের মোবাইল নম্বরে বারবার ফোন দিয়েও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।