বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে কক্সবাজারে নাফ নদীর অরক্ষিত ১০ কিলোমিটার জুড়ে বসানো বিশেষ ক্যামেরা পরিদর্শন করেছে একটি প্রতিনিধি দল।
Published : 06 Mar 2020, 11:40 PM
‘স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভেইল্যান্স এন্ড ট্যাকটিক্যাল বর্ডার রেসপন্স সিস্টেম’ নামের এই সীমান্ত নজরদারির এই আধুনিক পদ্ধতি কতটা কাজে দেবে সেসব নিয়ে পর্যালোচনা করতেই শুক্রবার বিকালে তারা দেখতে আসেন।
এ প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আনসার ও সীমান্ত) মো. শাহেদ আলী ও বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন ও প্রশিক্ষণ) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার ফরিদ হাসান।
দেশের সীমান্ত সুরক্ষায় প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলকভাবে নজরদারীর জন্য এ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করেছে বিজিবি দাবি করেছে।
অবশ্য এর আগে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যশোর সীমান্তে একটি আধুনিক নজরদারির প্রযুক্তি স্থাপন করা হয়েছিল।
টেকনাফ সীমান্তের শাহপরীর দ্বীপ থেকে সাবরাং পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকায় এ প্রযুক্তি স্থাপন করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ( আনসার ও সীমান্ত ) মো. শাহেদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, “সীমান্তে নজরদারীর জন্য আধুনিক এ প্রযুক্তি ব্যবহারের যদি সুফল পাওয়া যায় পর্যায়ক্রমে দেশের সব সীমান্ত এলাকাকে এর আওতায় আনা হবে।
“প্রাথমিকভাবে সীমান্তের স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে আগে এ প্রযুক্তি স্থাপন করা হচ্ছে।”
এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, “টেকনাফ সীমান্তের পাশাপাশি যশোর জেলার কুটাখালীতে ১০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকাকে স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভেইল্যান্স সিস্টেমের আওতায় আনা হয়েছে। সেখানকার সিস্টেমটা একটু ভিন্ন। কারণ সেখানে সাইন্সপিক ক্যাবল বসানো হয়েছে মাটির নিচে।
“কেউ যদি সাইন্সপিক ক্যাবল অতিক্রম করে সাথে সাথে সার্ভার রুমে সিগন্যাল দেবে। সার্ভার রুম থেকে বিজিবির দায়িত্বশীল সদস্যরা সিগন্যাল পাঠাবে এবং ওয়াকিটকির মাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে সন্দেহভাজন লোকজনকে শনাক্ত ও আটক করা সম্ভব হবে।”
যশোরে সীমান্তে চোরাচালানসহ অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কার্যকারিতা পাওয়া সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে শাহেদ আলী বলেন, টেকনাফ সীমান্তে আধুনিক এ প্রযুক্তি ব্যবহারে বছরের অন্য সময় সুফল পাওয়া গেলেও বর্ষাকালে কার্যকারিতার ক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। এর ফলে এটি ব্যবহার কিছুদিন অচল ছিল।”
এ প্রযুক্তির কার্যকারিতা সারা বছর ধরে চলে কিনা সেটি মনিটরিং করতে পরিদর্শনে এসেছেন বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে যাতে সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোন ধরনের ঘাটতি না থাকে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পরিদর্শনে আসা হয়েছে। বিষয়টি প্রতিবেদন আকারে মন্ত্রণালয়ে তুলে ধরে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় টেকনাফ সীমান্তের শাহপরীর দ্বীপ থেকে সাবরাং পর্যন্ত প্রথম ধাপে ‘স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভেইল্যান্স এন্ড ট্যাকটিক্যাল বর্ডার রেসপন্স সিস্টেম’ স্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. ফয়সল হাসান খান।
ফয়সল বলেন, পরবর্তীতে সাবরাং থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি সীমান্ত এলাকায় স্থাপন করা হবে।
“এটি সম্ভব হলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি অপরাধ প্রবনতা নিয়ন্ত্রণের আওতায় আসবে।”
এর আগে দুপুরে বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ান দপ্তরের ‘স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভেইল্যান্স এন্ড ট্যাকটিক্যাল বর্ডার রেসপন্স সিস্টেম’ এর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ঘুরে দেখেন তারা।