নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর ছাত্রবাস থেকে বিপুল সংখ্যক দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় সেখানে মদ-গাঁজাও পাওয়া যায়।
Published : 02 Sep 2019, 08:13 PM
সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাকারিয়ার নেতৃত্বে শতাধিক পুলিশ ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলে এ অভিযান পরিচালনা করে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হল প্রভোস্ট ও শিক্ষক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার ও রোববার ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর বর্তমান চালু থাকা একমাত্র হলটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ নাছের জনি জানান, প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র, গাঁজা ও মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি জানান, উদ্ধার করা হয়েছে বড় কিরিচ, চাপাতি, দা, বটি, রড, লাঠি ও হাতুড়ি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ঘটনার সঙ্গে জড়িদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন। ছাত্র হল বন্ধ ঘোষণার পর ক্লাস-পরীক্ষা চালানো অযৌক্তি বলেও মনে করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলে আসন সংখ্যা ৩৪৮। এর মধ্যে বৈধভাবে সিট বরাদ্দ নিয়ে থাকছে ১৯ জন। বৈধ, অবৈধ এবং বহিরাগত মিলিয়ে হলটিতে দীর্ঘদিন থেকে পাঁচ শতাধিক ছাত্র অবস্থান করে আসছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিদার-উল-আলম ছাত্র হলে অস্ত্র রাখা এবং সংঘর্ষ ও হামলা-ভাংচুরের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।
এনিয়ে রোববার সন্ধ্যায় দুই পক্ষের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসে। বৈঠক চলাকালে রাত ৮টার দিকে ছাত্রলীগের ওই দুই পক্ষের মধ্যে আবার সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ক্যাম্পাসে হাতবোমা বিস্ফোরণ এবং ভাঙচুর চালানো হয়। এতে দুই শিক্ষকসহ ছাত্রলীগের দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলের প্রভোস্ট কাওসার হোসেন বলেন, গত শনিবার ও রোববার ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় ছাত্র হলে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় হল প্রভোস্টকে প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি এবং কৃষি বিভাগের চেয়ারম্যান গাজী মো. মহসিনকে প্রধান করে ৭ সদস্যে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সংঘর্ষের সময় আহত আবদুল মালেক উকিল হলের (চালু হওয়ার অপেক্ষায়) প্রভোস্ট ড. ফিরোজ আহমেদকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে আজ সকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, সংঘর্ষের পর সাধারণ ছাত্রদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রাবাস ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। হলটিতে দীর্ঘদিন থেকে সিট বরাদ্দ না পাওয়ার পরও বেশ কিছু ছাত্র অবস্থান করে আসছে।