জনস্বার্থে এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে লিখিতভাবে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি স্থানীয়রা; পলিথিনের ব্যবসা চলছে প্রকাশ্যেই।
মঙ্গলবার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তার কাঁচাবাজার আড়তে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন তার দোকানে বিভিন্ন ধরনের পলিথিনের স্তূপ সাজিয়ে বসে আছেন।
পাশেই আনিসুর রহমান, মো. হুমায়ুন ও আঙ্গুরের দোকান, সেখানেও ওই পলিথিনই বিক্রি হয়।
জসিম বলেন, তারা গাজীপুর নগরীর ভোগড়া বাইপাস এলাকা থেকে পাইকারী দরে পলিথিন কিনে এনে বরমী, শ্রীপুর, কাওরাইদসহ আশপাশের এলাকায় বিক্রি করেন।
ঢাকার লালবাগ ও টঙ্গী বাজার থেকে ওই পলিথিন ভোগড়া বাইপাস কাঁচা বাজার এলাকায় সরবরাহ করা হয় বলে তথ্য দেন তিনি।
নিষিদ্ধ পলিথিন কেন বিক্রি করছেন এই প্রশ্নে জসিম বলেন, “আমাদের পলিথিন বিক্রি বন্ধ করার আগে যেখান থেকে পলিথিন উৎপাদন হয় এবং সরবরাহ করা হয় সেইসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করেন।”
প্রায় ৪-৫ বছর ধরে মাওনা চৌরাস্তা এলাকার পলিথিনের ব্যবসা চালিয়ে আসা মো. হুমায়ুনের দাবি, আনিস নামের এক ব্যক্তি পুলিশকে ‘ম্যানেজ করার’ নাম করে স্থানীয় পলি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা আদায় করেন।
হুমায়ুনের কাছ থেকে ফোন নম্বর নিয়ে আনিসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
পরিবেশ বাঁচাতে সরকার সরকার ২০০১ সালে পলিথিন নিষিদ্ধ করলে সাধারণ মানুষ সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিল। এরপর বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালিয়ে দোকান থেকে পলিথিন জব্দ করা হয়েছে, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কারখানা। কিন্তু পলিথিনের ব্যবসা বা ব্যবহার বন্ধ হয়নি।
গাজীপুরের অবৈধ পলিথিনের ব্যবসা বন্ধের জন্য ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে তৎকালীন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন নজরুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি।
উপমন্ত্রী সে সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালককে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিলেও প্রতিকার মেলেনি বলে জানান নজরুল।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালের এপ্রিলেও তিনি র্যাবের মহাপরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তারপরও অবাধে পলিথিনের ব্যবসা চলছে।
নিষিদ্ধ পলিথিন এরকম প্রকাশ্যে বিক্রি হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে শ্রীপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শামছুল আরেফীন বলেন, তিনি কয়েকদিন আগে এ উপজেলায় যোগ দিয়েছেন। ফলে বিষয়গুলো তার জানা নেই।
অভিযোগের সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
আর পরিবেশ অধিদপ্তরের গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুস ছালাম বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন তারা।