ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার এক সহপাঠীকে পিবিআই আটক করেছে বলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
Published : 16 Apr 2019, 07:03 PM
তবে পিবিআই এ আটকের কথা স্বীকার করেনি।
সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার কেন্দ্র সচিব নুরুল আফসার ফারুকী বলেন, পিবিআইয়ের সদস্যরা মঙ্গলবার দুপুরে মাদ্রাসার পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা শেষে জান্নাতুল আফরোজ মনিকে আটক করেছেন।
নুসরাত হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শাহ আলাম বলেন, তাদের কোনো টিম মনি নামে কাউকে আটক করেনি। তবে অন্য কোনো বাহিনী আটক করেছে কিনা তা তিনি নিশ্চিত করে জানেন না।
এই মাদ্রাসারই ছাত্রী আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষা দিতে গেলে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এ মামলায় এজহারভুক্ত আটজনের মধ্যে সাতজন ও সন্দেহভাজন আরও আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে, এ হত্যা মামলায় জড়িত অভিযোগ তুলে সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
শাস্তির দাবিতে ফেনী ও সোনাগাজীতে মানববন্ধন
নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফেনী ও সোনাগাজীতে মানববন্ধন করেছে একাধিক সংগঠন।
মঙ্গলবার সকালে জেলা শহরের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করে ‘ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতি’। বিকালে একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শেষে শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে মানববন্ধন করে ‘সরকারী জিয়া মহিলা কলেজ’ শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া সকালে সোনাগাজী বাজারের জিরো পয়েন্টে মানববন্ধন করে ‘সোনাগাজী মহিলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়’ শিক্ষার্থীরা।
ফেনী ও সোনাগাজীর আরও কয়েকটি স্থানেও বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন করেছে।
ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোশারফ হোসেন মানববন্ধনে তার বক্তব্যে বলেন, “দুই আসামির জবানবন্দিতে নুসরাত হত্যার সঙ্গে জড়িত সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুহুল আমিনের নাম উঠে এসেছে। অবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওয়তায় আনা হোক।”
অন্য বক্তারাও নুসরাতে হত্যায় জড়িত সোনাগাজী সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ সকল অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা না হয় সে ব্যাপারে সরকারের সজাগ থাকার আহ্বান জানান তারা।
নুসরাত হত্যার ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই নোমান মামলা দায়ের করেছেন।