পাঠকের অপেক্ষায় পিরোজপুর জেলা গ্রন্থাগার

পরিপাটি ভাবে সাজানো বই, পড়ার জন্য রয়েছে মনোরম পরিবেশ; এমনকি পাঠকদের ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে। এত আয়োজনেও পাঠক টানতে পারছে না পিরোজপুর জেলা সরকারি গণ গ্রন্থাগার।

পিরোজপুর প্রতিনিধিহাসিবুল ইসলাম হাসান, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2019, 07:37 AM
Updated : 5 Feb 2019, 08:12 AM

কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে এ গ্রন্থাগারের সদস্য আছেন ৪০ জন; তাদের বেশিরভাগই অনিয়মিত। এ পাঠাগারে ২৬ হাজার বই থাকলেও টেবিলগুলো অনেকটাই খালি পড়ে থাকে।  

পাঠকের মত জনবলেরও সংকট রয়েছে এ জেলা পাঠাগারে। লাইব্রেরিয়ানসহ সাতটি পদের মধ্যে চারটি পদই শূন্য বলে জানালেন জেলা সরকারি গণ গ্রন্থাগারের জুনিয়র লাইব্রেরিয়ান নাজমুন্নাহার।

তিনি বলছেন, সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেট; এখন আর কেউ বই পড়ার জন্য লাইব্রেরিতে আসতে চায় না। তারপরও গ্রন্থাগারের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা।

২০১৩ সালের ১৯ মার্চ ৩৩ শতাংশ জমির ওপর একতলা ভবনে পিরোজপুর জেলা গণ গ্রন্থাগারের যাত্রা শুরু হয়। বৃহস্পতি ও শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পাঠাগার খোলা থাকে।

নাজমুন্নাহার জানান, বর্তমানে গ্রন্থাগারে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই, উপন্যাস, কবিতা ও ইংরেজি বইসহ ২৬ হাজার ২৯৬টি বই রয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন বাংলা ও ইংরেজি ভাষার মোট ১১টি জাতীয় দৈনিক রাখা হয়। ১৩০ জন পাঠক একসঙ্গে বসে পাঠকক্ষে বই পড়তে পারেন।

যে কেউ গিয়ে গ্রন্থাগারের পাঠকক্ষে বসে বই বা পত্রিকা পড়তে পারেন, সেজন্য সদস্য হওয়ার প্রয়োজন হয় না। প্রতিদিন শ দুয়েক এরকম পাঠক পায় জেলা গ্রন্থাগার, যাদের অধিকাংশই বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, অথবা চাকরিপ্রত্যাশী বেকার।

পাঠাগারের কিছু বই আছে, যেগুলো পড়তে চাইলে সদস্য হতে হয়। সদস্যরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বই বাড়ি নিয়ে যেতে পারেন। জেলা গ্রন্থাগারে এ রকম সদস্য আছেন মাত্র ৪০ জন।

পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান জানালো, সে গল্প উপন্যাস পড়তেই বেশি ভালোবাসে। তাই স্কুলের পর সুযোগ পেলেই গ্রন্থাগারে চলে আসে।

সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী কামরুল ইসলামের পছন্দ কবিতা। কিন্তু গ্রন্থাগারে কবিতার বইয়ের যে সংগ্রহ, তাতে তার তৃপ্তি মেটে না।

“তবে এখানে এলে ফ্রি ওয়াই-ফাই পাওয়া যায়। পত্র-পত্রিকা পড়লে দেশ-বিদেশের খবকর আর তথ্য পাওয়া যায়।”

জুনিয়র লাইব্রেরিয়ান নাজমুন্নাহার বলেন, পাঠক ও সদস্য বাড়ানোর চেষ্টা থেকেই তারা গ্রন্থাগারে ইন্টারনেট ও ফ্রি ওয়াই-ফাই সেবা চালু করেছেন। পাশাপাশি কুইজ প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন জাতীয় দিবসে রচনা প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হচ্ছে, যাতে শিক্ষার্থীদের পাঠাগারে যাওয়া আসা বাড়ে।  

এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলেও নাজমুন্নাহার জানান।