এছাড়া ঘাট পারের যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিলেও এখানে ইজারাদার কোনো খেয়া দেননি।
চালকরা বলছেন, তাদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দুই-তিন গুণ বেশি টাকা করা হচ্ছে। কিন্তু রশিদ দেওয়া হচ্ছে না।
নড়াইলের বাসচালক মো. রানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের ৫২ সিটের বাস পার করতে ২১০ টাকা নিয়েছে। কোনো রশিদ দেয়নি।
“এছাড়া সিরিয়ালের জন্য নড়াইল জেলার লোহগড়া উপজেলার কলনা পাড়ে ৩০ টাকা নেয়া হয়েছে। এখানে ফেরিভাড়ার সরকারি তালিকা অনুসরণ করা হয় না। মাত্রাতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। ঘাটমালিক ও আদায়কারীরা অত্যন্ত প্রভাবশালী। তাই তারা যা খুশি তাই করছেন।”
ঘাটে টাঙানো সরকারি তালিকায় দেখা যাচ্ছে, বড় বাস পার করার ভাড়া ৬০ টাকা।
মাইক্রোবাস চাল মো. মনজু শেখ বলেন, ফেরি পারে তার কাছ থেকে ৬০ টাকা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সিরিয়ালে ২০ টাকা দিতে হয়েছে।
“এখানে আমাদের জিম্মি করে টাকা আদায় করা হচ্ছে।”
পিকআপ চালক মো. মিরাজ হোসেন বলেন, “পিকআপ পার করতে ১৫০ টাকা নিয়েছে। সিরিয়ালে দিয়েছি ৫০ টাকা। এ ঘাটের অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অরাজকতা বন্ধ হওয়া দরকার।”
নড়াইলের লক্ষ্মীপাশা গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, “এ ঘাটে জনপ্রতি ঘাট ইজারাদার ৩ টাকা আদায় করেন। এর বিনিময়ে তার নৌকায় ঘাট পার করে দেওয়ার কথা। কিন্তু ঘাট তার কোনো নৌকা নেই। পার হওয়ার জন্য অন্য নৌকায় আরও ৩ থেকে ৫ টাকা গুনতে হয়। এ নদী পার হতে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হয়।”
ঘাটের মাঝি মো. বাদশা মিয়া বলেন, “এ ঘাটে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী পার হয়। এটি অত্যন্ত ব্যস্ত ঘাট। এখানে যাত্রী পারাপারের জন্য ইজারাদারের কোনো নৌকা নেই।
এ ব্যাপারে ইজারাদারের আদায়কারী আঞ্জু মিয়া বলেন, “ইজারাদার যেভাবে বলেন, আমরা সেভাবেই করি। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই। আমরা ইজারাদারের চাকরমাত্র।”
এ বিষয়ে ইজারাদার এ কে এম মঞ্জুর হাসান বলেন, “অনেক যান ও যাত্রী ফ্রি পার করতে হয়। এটি পুশিয়ে নিতে কখনও কখনও সামন্য বেশি ভাড়া আদায় করা হয়।
“দুই-তিন গুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ সত্য নয়। এখন থেকে ফেরি পারের রশিদ দেওয়া হবে।”
সিরিয়ালের জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, “টাকা নেওয়া হয় নড়াইল পারে। ওদের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের গোপালগঞ্জের পাড়ে গাড়িতে কোনো সিরিয়ালের টাকা নেওয়া হয় না “
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে সড়ক বিভাগ কোনো অভিযোগ পায়নি বলে দাবি করেছে।
জেলা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খোন্দকার মো. শরিফুল আলম বলেন, “অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। বিষয়টি আমার জানা নেই।
“আপনাদের মাধ্যমে আমি বিষয়টি জেনেছি। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”