রোববার বিকালে কলাতলী এলাকায় এর উদ্বোধন করেন বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু শ্রীমৎ কুশলায়ন মহাথের।
'বুদ্ধ জ্যোতি ফাউন্ডেশন' প্রধান কুশলায়ন মহাথের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বলেন, জ্ঞান চর্চা, শিক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতির বিকাশে বাঙালি বৌদ্ধদের রয়েছে স্বর্ণালী অতীত। স্বর্ণালী সেই যুগে বৌদ্ধ বিহার বা মঠগুলো ছিল একেকটি জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্র। এতে শুধুমাত্র বাঙালিরা নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরাও জ্ঞান অর্জনের জন্য আসত।
“কুমিল্লার ময়নামতির শালবন বৌদ্ধ বিহার, বগুড়ার মহাস্থানগড় ও পাহাড়পুরের সোমপুর বৌদ্ধ বিহারের মতো অসংখ্য বিহার বা মঠ রয়েছে; যেগুলো সেই ঐহিত্যিক যুগে একেকটি জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্র ছিল।”
বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা উখিয়া অঞ্চলের সভাপতি এস ধর্মপাল মহাথেরর সভাপতি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু জ্ঞানপ্রিয় মহাথের, জ্যোতিপাল থের, বৌদ্ধ নেতা রাখাল চন্দ্র বড়ুয়া, বোধিমিত্র বড়ুয়া ও হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কক্সবাজার জেলার সহসভাপতি দীপংকর বড়ুয়া পিন্টু প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতীশ দীপংকর বৌদ্ধ বিহার ও ধ্যান কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ভিক্ষু জ্যোতিসেন থের।
তিনি বলেন, এ প্রতিষ্ঠানটি শুধু ধর্মদর্শন ও আধ্যাতিকতা চর্চার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না; এটি জাতি-ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের আর্ত-মানবতার সেবায় এগিয়ে যাবে।
প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি দাতব্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা হবে, যেখানে শিক্ষা, চিকিৎসা ও কারিগরিসহ নানা প্রতিষ্ঠান থাকবে বলে তিনি জানান।
জ্যোতিসেন বলেন, অতীশ দীপংকরের অহিংসা, শান্তি ও মানবকল্যাণ প্রতিষ্ঠায় এ বিহার ও ধ্যান কেন্দ্রটির সংক্ষিপ্ত নামকরণ করা হয়েছে 'হোয়াইট টেম্পেল'।
তাই প্রতিষ্ঠানটির সকল মূর্তি-প্রতিমূর্তি, সীমানা দেওয়াল এবং ভিতরে-বাইরে সকল স্থাপনার কারুকাজ করা হবে শান্তি 'সাদা রং' দিয়ে, বলেন জ্যোতিসেন।
এরপর সকালে অনুষ্ঠিত হয় ত্রিরত্ন পূজা, অষ্ট-পরিষ্কারসহ মহাসংঘদান ও সদ্ধর্ম সভা।
বিকালে বিহারাঙ্গনে স্থাপিত হয় অতীশ দীপংকর শ্রীজ্ঞানের প্রতিমূর্তি। পরে উদ্বোধন অনুষ্ঠান শুরু হয় আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে ।
সন্ধ্যায় জয়া প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্যদিয়ে বিশ্বশান্তি কামনায় বিশেষ 'শান্তি প্রার্থনা' করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, কক্সবাজার শহরের কলাতলীতে সমুদ্র সৈকতের কাছে পাহাড়ে টিএন্ডটি রোড এলাকায় দুই মাস আগে কেনা ১০ শতক জমির উপর এটি স্থাপিত হয়েছে। এতে প্রাথমিকভাবে বৌদ্ধ বিহার, বুদ্ধমূর্তি ও অতীশ দীপংকরের প্রতিমূর্তি স্থাপন করা হয়েছে।
পরবর্তীতে সেখানে ধ্যান কেন্দ্রের পাশাপাশি স্কুল-কলেজ, চিকিৎসা সেবা ও কারিগরিসহ নানা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।