বাঙালির চিরাচরিত ঐতিহ্যকে ধারণ করে বাগেরহাটের মোল্লাহাটে ভূমি কর ও রাজস্ব আদায়ে উপজেলা ভূমি অফিসে ব্যতিক্রমি ‘ভূমি-হালখাতা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
Published : 16 Apr 2018, 12:05 AM
ঐতিহ্যবাহী হালখাতার আদলে ভূমি উন্নয়ন কর ও অন্যান্য ভূমি রাজস্ব আদয়ে ভূমি-হালখাতার এই আয়োজন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাহবুবুল আলম।
প্রথমবারের মতো শনিবার ভূমি অফিসে এ হালখানা অনুষ্ঠানে এসেছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মতর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, বিভিন্ন ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ সাধারণ মানুষ।
অনুষ্ঠানে আগতদের দেশি ফল, বাতাসা, কদমা, মুরলি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
হালখাতা উপলক্ষে অফিস চত্বর সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। পথে পথে করা হয় আল্পনা। জমির মালিকরাও ভূমি উন্নয়ন কর দিয়ে রশিদ (দাখিলা) সংগ্রহের পাশাপাশি কর্মকর্তা আপ্যায়ন গ্রহণ করছেন।
সহকারী কমিশনার মো. মাহবুবুল আলম বলেন, জনগণের জন্য সেবা প্রাপ্তি সহজ করতে ব্যতিক্রমী কিছু করার ভাবনা থেকে হালখাতা করার চিন্তা আসে।
“আমার চেষ্টা ছিল ঐতিহ্যকে লালন করে কীভাবে সেবা প্রদান আর রাজস্ব আদায় সহজ করা যায়।
“সরকারি ছুটির দিনেও অফিসে এসে সবাই কাজ করছেন। সাধারণ জনগণের কাছ থেকেও খুল ভালো সাড়া পেয়েছি। ভূমি অফিস নিয়ে অনেকের মাঝেই একটি নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। সেবা পেতে হয়রানি, দাললের কথা সবাই বলে। আমি এই ধারণা ভাঙতে চেয়েছি।”
এই কাজে অফিসের সহকর্মীসহ সবাই তাকে সহযোগিতা করেছেন বলে জানান মাহবুবুল আলম।
ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে আব্দুল আলিম মোল্লা বলেন, “এত সুন্দর পরিবেশে খাজনা দিতে পেরে ভালো লাগছে। এখনও হালখাতা খুব এটা হয় না। আমি আমার ছেলে মেয়ে দেরও নিয়ে আসছি। খুব ভালো লাগছে। সরকারি অফিসে দ্রুতই কাজ হয়েছে। আবার তারা আপ্যায়নও করল।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন আল ফারুক বলেন, “হালখাতা আমাদের সংস্কৃতির সাথে ঐতিহ্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই উদ্যোগটাকেই নতুন ভাবে নিয়ে আসা হয়েছে। কোনো জমি ভোগ দখল করতে দলিল, দখল ও দাখিলা আবশ্যক। আমি মনে করি ভূমি-হালখাতা পালনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বড়বে।”
একই সাথে ঐতিহ্য টিকে থাকবে। এ ধরনের কার্যক্রম রাজস্ব আদায় সাফল্য নিয়ে আসবে বলে তাল আশা।
মোল্লাহাট উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শাহিনুর আলম সানা বলেন, “এখনকার ভূমি সহকারী কমিশনার নিজ উদ্যোগে এই আয়োজন করেছেন। আমাদের হালখাতার ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে এনে তার এই উদ্যোগ সবাইকে কর প্রদানে উৎসাহী করবে। আমরা আশা করি প্রতিবছর এই উদ্যোগ নেওয়া হলে খুব ভালো হবে।”