লস্কর নিয়োগ নিয়ে পোস্ট: আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে আরেক মামলা

চট্টগ্রাম বন্দরে লস্কর নিয়োগ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক-কলামনিস্ট আসিফ নজরুলের ফেইসবুক স্ট্যাটাসে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের মানহানি হয়েছে অভিযোগে মাদারীপুরের আরেকটি মামলা হয়েছে।

মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Nov 2017, 10:28 AM
Updated : 27 Nov 2017, 10:28 AM

সোমবার সকালে মাদারীপুর সদর থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয় বলে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ওসি কামরুল হাসান।

মন্ত্রীর ভাগ্নে সৈয়দ আসাদ-উজ-জামান বাদী হয়ে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলাটি করেন।

ওসি বলেন, “মন্ত্রীর ভাগ্নে গত ২১ নভেম্বর থানায় আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য পুলিশ সদর দপ্তরে অনুমতির জন্য পাঠাই।

“গতকাল অনুমতি পাওয়ায় আজ (সোমবার) মামলা নথিভুক্ত করি।”

কলামনিস্ট আসিফ নজরুল

এরআগে গত ২৩ নভেম্বর নৌমন্ত্রীর চাচাতো ভাই মাদারীপুর জেলা পরিষদের সদস্য ফারুক খান বাদী হয়ে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন।

মামলার নথির বরাত দিয়ে ওসি জানান, আসিফ নজরুল তার ফেইসবুক আইডিতে দেওয়া স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছেন যে, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়োগ পরীক্ষায় ৯২ জন উত্তীর্ণ হয়েছে, যার মধ্যে ৯০ জন নৌপরিবহন মন্ত্রীর এলাকা মাদারীপুরের বাসিন্দা। অথচ উনি চাইলে ৯২ জনই উনার এলাকার লোক হতে পারতো। ২ জন ভিন্ন এলাকার লোক নিয়োগ দিয়ে উনি সততার যে দৃষ্টান্ত দেখালেন তা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’

“এতে নৌমন্ত্রীর সম্মানহানি হওয়ার পাশাপাশি তার পরিবার ও দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও সর্ব সাধারণের মনে ক্ষোভ ও বিশৃংখলা সৃষ্টি করে মন্ত্রীর ব্যক্তিগত পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে।”

সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরে লস্কর পদে নিয়োগে নৌমন্ত্রীর জেলা মাদারীপুরের বেশি চাকরিপ্রার্থী নিয়োগ পেয়েছে বলে ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা ওঠে। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীও।

‘আমরা চট্টলবাসী’র ব্যানারে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এ নিয়োগ বাতিলের দাবিও জানানো হয়।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মন্ত্রী শাজাহান বলেছেন, মেধার ভিত্তিতে ওই পদে চাকরি পেয়েছেন তার জেলার প্রার্থীরা।

গত বৃহস্পতিবার বন্দরে লস্কর নিয়োগের ফল ঘোষণা করা হয়। তখন থেকে শুরু হয় আলোচনা।

নিয়োগের বিষয়টি সংসদে তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন চট্টগ্রামের দুই সংসদ সদস্য জাসদের মঈন উদ্দীন খান বাদল ও জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।

নিয়োগ আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে শাজাহান খান সংসদকে জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে লস্কর পদে ৯২ জন নয়, ৮৫ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।। চাকরির বিধান অনুযায়ী এবং কোটা অনুসরণ করে চাকরি দেওয়া হয়েছে।

“এর মধ্যে চট্টগ্রামের ২৩ জন, কক্সবাজারের চার জন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের দুইজন ছাড়াও নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুর, গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার মানুষ চাকরি পেয়েছেন।”

এ ঘটনায় গত ১৮ নভেম্বর আসিফ নজরুল তার ফেইসবুক পাতায় স্ট্যাটাসটি দেন।