নাটোরের চলনবিলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উদ্বিগ্ন কৃষকরা ডুবন্ত জমির ফসল তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
Published : 26 Apr 2017, 11:07 PM
সরেজমিনে দেখা গেছে, চলনবিলের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া আত্রাই নদীর পানি সিংড়া উপজেলার বিলদহর-কৃষ্ণনগর বাঁধের কাটা অংশ দিয়ে বিলে প্রবেশ করছে।
এতে চলনবিলের ভেতরের ক্ষুদ্র আকৃতির বিলদহর ও কৃষ্ণনগর বিলে চাষ করা বোরো ধান ক্রমাগত পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
প্রায় প্রতিটি ক্ষেতে হাঁটুর উপরে পানি। সারাদিন এ দুটি বিলে চাষিদের বিরামহীনভাবে ধান কাটতে দেখা গেছে।
উজানের ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে দেশের উত্তর-পূর্বের জেলাগুলোর মতো নাটোরের চলনবিলেও বোরো ক্ষেত প্লাবিত হতে থাকে। এর প্রেক্ষিতে নাটোরের সিংড়া উপজেলা প্রমাসন মঙ্গলবার মাইকিং করে কৃষকদের ধান কেটে নেওয়ার পরামর্শ দেয়।
যেসব জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে সেসব জমির ধান আগে কাটা হচ্ছে। এ কারণে এলাকায় শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বেড়ে গেছে বহুগুণ। কোথাও কোথাও টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
বিলদহর এলাকার আবুল বাসার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শ্রমিকরা প্রতিমণ ধান কাটার জন্য ১৫ থেকে ২০ কেজি করে ধান নিচ্ছে। যারা ধান নিচ্ছে না তারা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা করে মজুরি আদায় করছে। এতে ধান উৎপাদনের খরচ বেড়ে গিয়ে চাষিদের লোকসান গুণতে হচ্ছে।
এখানে ধান কাটার কাজ করতে এসেছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চাঁদপুর এলাকার একদল শ্রমিক।
এই দলের নেতা মশিউর রহমান বলেন, তারা বাধ্য হয়ে কিছুটা বেশি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন; কারণ সারাক্ষণ পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে ধান কাটতে হচ্ছে। এতে ধান কাটা এগুচ্ছে না।
এপ্রিলের শুরু অসময়ে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণার বিস্তীর্ণ এলাকায় বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন লাখ লাখ কৃষক।
আকস্মিক বন্যায় বোরো ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি মারা গেছে বিপুল পরিমাণ মাছ ও হাঁস। হাওরের ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।
আগামী বোরো ফসল ঘরে না ওঠা পর্যন্ত সরকার হাওরাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দেওয়ার কথা বলেছিলেন ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।