কুমিল্লার কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও খুনি শনাক্ত হয়নি, সিআইডির ডিএনএ পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত মিললেও এখনও আটকে আছে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন।
Published : 19 May 2016, 08:57 PM
আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডে এখনও কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এ ঘটনার বিচার দাবিতে আন্দোলনকারীরা।
কুমিল্লা গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র খায়রুল আলম রায়হান বলেন, ৬০ দিন অতিবাহিত হচ্ছে। আবারও রাজপথে আন্দোলনের নামার প্রস্ততি নিচ্ছে কুমিল্লার আন্দোলনকারীরা।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, “তনু নারীর নিরাপত্তা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এবার গণঅন্দোলন শুরু হলে তা আর থামবে না।”
কুমিল্লা গণজাগরণ মঞ্চ সংগঠক আবুল কাশেম হৃদয় বলেন, “প্রথম ময়নাতদন্তকারী দলের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা কারোর চাপে বা কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রথম রিপোর্টটি দিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। আর তাই প্রথম ময়নাতদন্তকারীদের আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে রহস্য উদঘাটন প্রয়োজন।”
তবে মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান।
তিনি বলেন, ডিএনএ প্রতিবেদনে পাওয়া তিন ব্যক্তির আলামতের সঙ্গে ঘটনাস্থলের প্রাপ্ত আলামত নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে। এরপর সন্দেহভাজনদের ডিএনএ টেস্টের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।
গত ২০ মার্চ রাতে নাট্যকর্মী তনুর লাশ কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে উদ্ধার করা হয়। পরদিন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। ওই দিনই অজ্ঞাতদের আসামি করে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন তনুর বাবা এয়ার হোসেন।
মামলার তদন্ত ভার পুলিশ, ডিবি হয়ে সিআইডির হাতে যায়। আদালতের নির্দেশে গত ৩০ মার্চ তনুর লাশ কবর থেকে তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করা হয়।
প্রথম ময়নাতদন্তে তনুকে ধর্ষণের আলামত এবং মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ পাওয়া যায়নি বলে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা জানালেও সিআইডির ডিএনএ টেস্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।
তবে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের ৫০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।
দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন সম্পর্কে ডা. কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, “সিআইডির কাছে ডিএনএ প্রতিবেদনের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। কাগজ পাওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।”
প্রথম ময়নাতদন্ত বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান কামদা বলেন, ওই ময়নাতদন্ত তিনি করেনি।
“তার দায়-দায়িত্ব আমার না।”