বঙ্গবন্ধু হত্যা ও যুদ্ধাপরাধসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর মামলার বিচারের ধারাবাহিকতায় কুমিল্লার কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার বিচার হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
Published : 09 May 2016, 10:13 PM
সোমবার বিকালে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার না হয়ে খুনিরা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে এটা কারও বিশ্বাস হয়নি, সেটাও হয়েছে। চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীরা ফাঁসির কাষ্ঠে গিয়েছে এবং যাচ্ছে।
“পুরান ঢাকায় বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে নিজ দলের ছেলেদেরও ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। সেভাবে তনু হত্যা থেকে শুরু করে সব হত্যার বিচার এই সরকার শেষ করবে। তবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় সময় লাগে, সে সময় দিতে হবে।”
জিয়াউর রহমানসহ কোনো হত্যাকাণ্ডের বিচার না করায় বিএনপি নেতাদের মুখে আইনের শাসনের কথা বলা ‘মানায় না’ বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে তার নামে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান মেলার সমাপনীতে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে অর্থলোপাটের অভিযোগ তোলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম।
তিনি বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কীভাবে এতো নির্বোধ হতে পারেন তা আগে বুঝতে পারিনি। আমেরিকায় এতো বড় অংকের অর্থ গোপন রাখা যায় তা আমরা এই প্রথম শুনলাম। যদিও কোনোভাবে এটা গোপন রাখা সেখানে সম্ভব নয়।
“অজ্ঞতার একটা সীমা আছে। তিনি (খালেদা জিয়া) কোনো প্রমাণ ছাড়া মুখে আসল বলে দিলেন। এখন চ্যালেঞ্জ করার পর আর কথা বলছেন না। বলছেন, টাকা পাচার করা হয়নি এটা আমাদের প্রমাণ করতে হবে। আমরা কেন প্রমাণ করব।”
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে নাসিম বলেন, “হত্যার ষড়যন্ত্রের ব্যর্থ হয়ে এখন বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সম্মানহানির জন্য মিথ্যাচার করা হচ্ছে। জ্বালাও-পোড়াও করে নির্বাচন বানচালে ব্যর্থ হয়ে এখন তিনি মিথ্যাচার করছেন। এমন জঘন্যতম মিথ্যাচারের সাহস তাকে কে দিয়েছে?
“জয় চ্যালেঞ্জ দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীও সংসদে এটা নিয়ে কথা বলেছেন, সৎসাহস থাকলে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন।”
ওয়াজেদ মিয়া সম্পর্কে নাসিম বলেন, “ক্ষমতার কাছাকাছি থেকেও তিনি কোনো সুবিধা নেননি। এমনকি নিজের চাকরির মেয়াদ পর্যন্ত বাড়িয়ে নেননি।”
‘অরাজনৈতিক’ ব্যক্তি হয়েও দুঃসময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে কাছ থেকে সহায়তা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা কাছ থেকে দেখেছি, কীভাবে শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর তাকে সহযোগিতা করেছেন। স্বৈরাচার এরশাদ ও খালেদা জিয়ার দুঃশাসন বিরোধী আন্দোলনে স্ত্রীকে পাশে থেকে সহায়তা দিয়েছেন।
“আমরা তাকে (ওয়াজেদ মিয়া) এমন সময়ে হারিয়েছি, যখন তিনি দেশকে অনেক কিছু দিতে পারতেন। তিনি কেমন মানুষ ছিলেন তার দুই সন্তানের বেড়ে ওঠা এবং কর্মকাণ্ড দেখেই বুঝা যায়।”
সকালে গণগ্রন্থাগার চত্বরে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন আয়োজিত দিনব্যাপী ওই বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
বিজ্ঞান মেলার অংশ হিসেবে ছিল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনী ও পোস্টার প্রদর্শনী, বিজ্ঞান বিতর্ক এবং বিজ্ঞান কুইজসহ নানা আয়োজন।
ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এ কে এম ফরহাদুল কবিরের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক আজিজুর রহমান, সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী বক্তব্য দেন।