রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি ও মাজারের খাদেম হত্যায় নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানার সহযোগী খয়বর হোসেনকে (৩৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
Published : 11 Dec 2015, 06:32 PM
বৃহস্পতিবার ভোরে খয়বরকে রংপুরের পীরগাছার পশুয়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পীরগাছার পশ্চিম সুন্দর খুটামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খয়বর হোসেন জেএমবির পীরগাছা ইউনিটের কমান্ডার বলে জানিয়েছেন কুনিও হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার ওসি এবিএম জাহিদুল ইসলাম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘জেএমবির পীরগাছা ও কাউনিয়া অঞ্চলের কমাণ্ডার মাসুদ রানাকে (৩৪) ৩ ডিসেম্বর পীরগাছার পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়ায় তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
‘পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে মাসুদ রানা ৩ অক্টোবর জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি, ১০ নভেম্বর মাজারের খাদেম রহমত আলীকে হত্যা এবং ৮ নভেম্বর বাহাই সম্প্রদায়ের নেতা রুহুল আমিনকে গুলি করে হত্যার চেষ্টায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।’
এছাড়া পীরগাছা ও কাউনিয়ায় তার বেশ কয়েকজন সহযোগী সক্রিয় আছেন বলেও আদালতে স্বীকার করেন মাসুদ রানা বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।
এই ওসি বলেন, ‘তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জেএমবির পীরগাছা ইউনিট কমান্ডার খয়বর হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তের স্বার্থে আমরা বিষয়টি প্রকাশ করিনি।
‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি ও মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যাকাণ্ডে তার জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় বিকেলে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানাই।’
কোনিও ও খাদেম হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক ছিলেন খয়বর উল্লেখ করে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার বাড়িতে ফিরে আসার খবর পেয়ে পীরগাছা থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
খয়বরকে দুটি মামলায় আসামি দেখিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০দিনের রিমাণ্ড চেয়ে রোববার আদালতে আবেদন করা হতে পারে।
কুনিও হোশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কাউনিয়া থানার ওসি বাদি হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়।
তাদের মধ্যে কোনিওর ব্যবসায়ী সহযোগী হুমায়ুন কবীর হীরা, রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য রাশেদ উন নবী খান বিপ্লবকে আটকের পর এ মামলায় আসামি দেখিয়ে রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে কারাগারে পাঠানো হয়।
বিপ্লব ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবীব উন নবী খান সোহেলের ছোট ভাই। এ ঘটনায় সোহেলকেও খুঁজছে পুলিশ।
এছাড়া রংপুর মহানগর যুবদল নেতা রাজিব হাসান সুমন ওরফে মেরিল সুমন, নওশাদ হোসেন রুবেল এবং যুবলীগ নেতা কাজল চন্দ্র বর্মন ওরফে ভরসা কাজলকেও আটকের পর এ মামলায় আসামি দেখিয়ে ১০ দিনের রিমাণ্ডে নেওয়া হয়। শনিবার তাদের রিমাণ্ড শেষ হবে।
তিন ব্যক্তি মোটরসাইকেলে করে এসে কুনিও হোশিকে গুলি করে হত্যা ও এবং বাহাই নেতাকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
অপরদিকে ১০ নভেম্বর মধ্যরাতে কাউনিয়ার মধুপুর ইউনিয়নের চৈতারমোড়ে মাজারের খাদেম রহমত আলীকে(৬০) কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ছেলের করা মামলায় স্থানীয় জামায়াতের তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করে রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এদিকে বাহাই নেতা ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) রুহুল আমীনকে গুলি করে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় তার স্ত্রীর করা মামলায় হাসপাতালের এক কর্মচারী নেতাসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তিনদিনের রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।