শুক্রবার সকালে চেঙ্গী ও মাইনী নদীতে সূর্যোদয়ের সঙ্গে ফুল দিয়ে পূজা শুরু করেন বিভিন্ন বয়সী চাকমারা।
Published : 12 Apr 2024, 06:35 PM
নদীতে ফুল ভাসিয়ে খাগড়াছড়িতে শুরু হয়েছে চাকমা জাতিগোষ্ঠীর নতুন বর্ষবরণের বিজুর আনুষ্ঠানিকতা।
শুক্রবার সকালে চেঙ্গী ও মাইনী নদীতে সূর্যোদয়ের সঙ্গে ফুল দিয়ে পূজা শুরু করেন বিভিন্ন বয়সী চাকমারা। ফুল বিজুর এই উৎসব মিলনমেলায় পরিণত হয়।
রীতি অনুযায়ী, পুরনো বছরের দুঃখ-গ্লানি ভুলে নতুন বছরের মঙ্গল কামনায় গঙ্গাদেবীর উদ্দেশে ফুল বিসর্জনকে বলা হয় ‘ফুল বিজু’। বাংলা ২৯ চৈত্র সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে এই আয়োজন শুরু করা হয়।
এ উপলক্ষে সকাল থেকে চাকমা তরুণ-তরুণীরা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে বন থেকে সংগ্রহ করা বিজু, মাধবীলতা, রজ্ঞনসহ নানা জাতের ফুল সংগ্রহ করে নিয়ে আসে।
উৎসবে অংশ নেওয়া রিয়া চাকমা বলেন, “প্রতি বছরই আমরা এই দিনের জন্য অপেক্ষা করি। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে ফুল সংগ্রহ করি। অলকানন্দা, মাধবীলতা, বিজু, লাল জবাসহ বেশ কয়েক রকমের ফুল সংগ্রহ করেছি। নদীর তীরে সেই ফুল দিয়ে গঙ্গা দেবীর পূজা করেছি। নতুন বছর আমাদের জন্য আরও সুখ আর শান্তি বয়ে আনুক।”
ত্রিশিতা চাকমা বলেন, “ফুল বিজুর মাধ্যমে আমাদের বিজু উৎসবের শুরু। আমরা সকালে চেঙ্গীর গাঙে ফুল দিয়ে দেবী গঙ্গার পূজা করেছি।”
একই কথা জানান উৎসবে অংশ নেওয়া সমারি চাকমা।
পাহাড়ের এই উৎসব দেখতে ভিড় করেছেন পর্যটকরা। বর্ণিল এই আয়োজন দেখে মুগ্ধ তারা।
চট্টগ্রাম থেকে সপরিবারে উৎসব দেখতে আসা চিকিৎসক মনিকা চন্দ বলেন, “চাকমাদের বিজু উৎসব নিয়ে অনেক শুনেছি। তাই এবার দেখতে আসলাম। দারুণ অভিজ্ঞতা হচ্ছে। খুব সুন্দর অনুষ্ঠান। আমাদেরও ভালো লাগছে।”
এ ধরনের উৎসব পাহাড়ে বসবাসরত মানুষের মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন আরও সুদৃঢ় করবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
স্থানীয় সংগঠক প্রদীপ্ত খীসা বলেন, “এই দিনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের পূর্বপুরুষরা এভাবে নদীতে ফুল বিজু উদযাপন করতেন। আমরাও সেই ধারাবাহিকতায় উদযাপন করছি। এখানে একটা সুন্দর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।”
চাকমাদের বিজু উৎসব চলবে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। শনিবার তাদের মূল বিজু এবং পরের দিন গজ্যাপজ্যা (অর্থাৎ বিশ্রামের দিন)।