গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব বলছে, অর্ধ শতাধিক মানুষকে অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়ে ‘মাস্টার’ উপাধি পেয়েছেন মনির।
Published : 11 Feb 2024, 09:55 PM
কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ের পাদদেশে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে র্যাব। সেখানে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র তৈরির কারিগর ও প্রশিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কক্সবাজার র্যাব ১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) মো. আবু সালাম চৌধুরী জানান, শনিবার গভীর রাতে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লামা শীলের ঝিরি পাহাড়ের পাদদেশে অভিযানে গিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পান তারা।
পরে সেখান থেকে কারিগর ও অর্ধ শতাধিক ব্যক্তিকে অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণদাতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির মাস্টার (৬০) রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কোদালিয়া কাটা (ছমুদা বড়বাড়ি) এলাকার বাসিন্দা।
র্যাবের দাবি, কক্সবাজারের অন্যতম শীর্ষ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নির্মাতা ও যোগানদাতা মনিরুল ইসলাম অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়ে মনির মাস্টার উপাধি পেয়েছেন।
র্যাব কর্মকর্তা আবু সালাম জানান, ওই পাহাড়ের পাদদেশে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ কিছু কারবারি অবস্থান করার খবর পান তারা।
পরে শনিবার রাতে র্যাব ১৫ সিপিএসসি ক্যাম্পের একটি দল ওই এলাকায় অভিযান চালায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে মনিরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে আরও ৩-৪ জন সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান।
মনিরুলের কারখানা থেকে দুটি এক নলা বন্দুক, দেশে তৈরি এলজির দুটি ব্যারেল, হাতল ছাড়া এলজির দুটি বডি, লোহার তৈরি দেশীয় এলজির ট্রিগারের ১৪টি ছোট অংশ, কাঠের হাতল যুক্ত করাত, ড্রিল মেশিন, লোহার তৈরি একটি বেঞ্চ ভাইস, লোহা পেটানোর কাজে ব্যবহৃত ‘টি’ আকৃতির একটি বস্তু, দুটি হাতুড়ি, লোহা কাটার একটি হেক্সো মেশিন ও পাঁচটি হেক্সো ব্লেড, দুটি প্লায়ার্স, একটি করে কাটিং প্লায়ার্স, লোহার তৈরি চিমটা, স্ক্রু ড্রাইভার, বাটাল, রামদা, পাঁচটি লোহার পাইপ এবং ৬৬টি তারকাটা উদ্ধার করা হয় বলে জানায় র্যাব।
ওই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনিরুল স্বীকার করেন, তিনি এ পর্যন্ত সহস্রাধিক আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করেছেন এবং অর্ধ শতাধিক ব্যক্তিকে অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনির আরও জানান, তার বাবার কাছে থেকে তিনি অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণ নেন এবং দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এ কাজ করে আসছেন।
র্যাবের দাবি, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করে ওই কারখানায় অস্ত্র তৈরির পর রোহিঙ্গা শিবির ও আরসা সদস্যদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করতেন বলে জিজ্ঞাসাবাদের তাদের কাছে স্বীকার করেছেন মনিরুল।
অস্ত্র ও সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার মনিরুল ইসলামকে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে জানিয়ে র্যাব কর্মকর্তা আবু সালাম বলেন, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।