ছাঁটাই বন্ধ, হাজিরা বোনাস ও নতুন করে নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবিতে সকাল থেকে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা।
Published : 04 Sep 2024, 08:05 PM
সাভারের আশুলিয়ায় বিভিন্ন দাবিতে চাকরি প্রার্থী ও পোশাক শ্রমিকদের দিনভর বিক্ষোভের মুখে ৮০টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভের মধ্যেও বেশ কয়েকটি কারখানার সামনে পাহারা বসিয়ে ভেতরে উৎপাদন চালু রাখার খবর পাওয়া গেছে।
ছাঁটাই বন্ধ, হাজিরা বোনাস ও নতুন করে শ্রমিক নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন বলে জানান শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম।
সকাল থেকে নবীনগর-চন্দ্রা ও বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশের সবকটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া জিরানী এলাকার কয়েকটি কারখানায় ছুটি দেয় কর্তৃপক্ষ।
কারখানায় ছুটি ঘোষণার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। তবে প্রশাসনের জোরালো পদক্ষেপে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠে।
পুলিশ, শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে যথানিয়মে কারখানায় যান শ্রমিকরা। কিন্তু কাজে যোগ না দিয়ে তারা বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করলে কর্তৃপক্ষ একের পর এক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।
পরে শ্রমিকরা উৎপাদন চালু রাখা কারখানাগুলোর সামনে গিয়ে বিক্ষোভ ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে সেসব কারখানাতেও ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। একপর্যায়ে শ্রমিকরা বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, হাজিরা বোনাস এবং নতুন করে কারখানায় শ্রমিক নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবি জানান।
পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় পর্যায়ক্রমে আশুলিয়ার ছোট বড় অন্তত ৮০টি পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
বাইপাইল থেকে জিরাবো পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হলেও বিক্ষিপ্ত অবস্থায় বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন শ্রমিকরা। এতে আব্দুল্লাহ্পুর-বাইপাইল সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
তবে শিল্প পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এদিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পলাশবাড়ি, মুজারমিল, জিরানীবাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে চাকরি প্রার্থী ও বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ ছাড়া চক্রবর্তী এলাকার নরবান কমটেক্স কারখানার সামনে রাস্তা বন্ধ করে শত শত শ্রমিক বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা একটি প্রাইভেট কার ভাঙচুর করেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও শিল্প পুলিশ।
এদিকে আন্দোলনের মধ্যে জিরানী বাজার, টেংগুরী গোহাইলবাড়ি ও মেশিনপাড় এলাকার বেশ কয়েকটি কারখানায় সামনে পাহারা বসিয়ে উৎপাদন চালু রাখার খবর পাওয়া গেছে।
পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, বিভিন্ন দাবিতে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শ্রমিকরা বিক্ষোভে নামেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
তবে শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে কর্তৃপক্ষ বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের জিরাবো পর্যন্ত হামীম, শারমীনসহ ৮০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে বলে জানান তিনি।