“তিন দিন ধরে আসছি, একদিনও মাল পাইনি। প্রতিদিনই ফিরে যেতে হয়েছে খালি হাতে”, বলেন এক ক্রেতা।
Published : 06 Mar 2025, 08:16 PM
রমজান ঘিরে সারা দেশের ন্যায় রংপুরেও নিম্ন আয়ের মানুষজনের জন্য স্মার্ট কার্ড ছাড়া পণ্য নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি।
এতে অন্য সময়ের তুলনায় বেড়েছে পণ্যের চাহিদা। সেইসঙ্গে পণ্য না পেয়ে ফিরে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকেই।
বৃহস্পতিবার ভোরে টিসিবির পণ্য পেতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন রংপুর নগরীর শিমুলবাগ এলাকার রহিমা বেগম। কিন্তু পণ্য না পেয়েই তাকে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছে।
তিনি বলেন, “তিন দিন ধরে আসছি, একদিনও মাল পাইনি। প্রতিদিনই ফিরে যেতে হয়েছে খালি হাতে।”
নগরের রংপুর প্রেস ক্লাব, কাচারি বাজার, পার্ক মোড়, কালীবাড়ি মোড়, সার্কিট হাউসের সামনে, তামপাট টেম্পুর মোড়, পান বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রঘু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, র্যাব অফিসের সামনে এবং চার মাথা এলাকায় ১০ জন ডিলারের মাধ্যমে টিসিবি পণ্য বিক্রয় করা হয়। প্রতিদিন ডিলার প্রতি ৪০০ জনের পণ্য দেওয়া হয়।
একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি চিনি, দুই কেজি ছোলা ও ৫০০ গ্রাম খেজুর কিনতে পারেন।
প্রতি লিটার তেল ১০০ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডাল ৬০ টাকা, চিনি ৭০ টাকা, ছোলা ৬০ টাকা এবং ১৫৬ টাকা কেজি দরে ৫০০ গ্রাম খেজুর ৭৮ টাকায় বিক্রি করা হয়; যা বাজার মূল্যের চেয়ে প্রায় ৪০০ টাকা সাশ্রয় হয়। তাই টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে প্রতিদিন দীর্ঘ হচ্ছে লাইন।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরের প্রতিটি পয়েন্টে পণ্য কিনতে উপচে পড়া ভিড়। সেহরি খেয়ে লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। চাহিদার তুলনায় পণ্য কম পাওয়ায় এমন পরিস্থিতি হচ্ছে বলে জানান ডিলাররা।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ট্রাক সেলের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করেন টিসিবি ডিলার ‘মেসার্স সেকেন্দার আলী টেডার্স’। বেলা ১২টার দিকে ডিলার পণ্য নিয়ে সেখানে গেলেই ক্রেতারা ট্রাক ঘিরে ধরেন। কে আগে পণ্য নেবেন এই নিয়ে হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়।
পরিস্থিতি খারাপ হলে কয়েকজনকে পণ্য দিয়ে সেখান থেকে ট্রাকটি চলে যায়। পরে হতাশ হয়ে শত শত ক্রেতা ফিরে যান।
ক্রেতাদের অভিযোগ, টিসিবির ট্রাক সময় মতো আসে না। কারো কারো টাকা আগে নেওয়া হয়। অনেকে আবার পরে এসে আগে মাল তুলে নিয়ে যান। মূলত চাহিদার এক তৃতীয়াংশ পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ।
টিসিবি রংপুর কার্যালয়ের প্রধান হাবিবুর রহমান বলেন, “আগে প্রতি ট্রাকে ২০০ জনকে দিতাম। এখন ৪০০ জনকে দিচ্ছি। একটি দুষ্টু চক্র ঝামেলা করছে। এ ছাড়া এক এলাকার লোক অন্য এলাকা গিয়ে পণ্য নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে সতর্ক এবং কঠোর অবস্থানে আছি।”