“ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছিল। কিন্তু গুলিতে তার জীবন শেষ হয়ে গেল।”
Published : 08 Aug 2024, 04:05 PM
ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিতে আহত লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার এক শিক্ষার্থী তিনদিন পর হাসপাতালে মারা গেছেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সকালে মিরাজ খাঁন নামের ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়। এর আগে গত ৫ অগাস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনে মিছিল চলাকালে গুলিতে আহত হন তিনি।
২০ বছর বয়সী মিরাজ লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের খাঁনপাড়া এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে।
তিনি মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশুনার পাশাপাশি ঢাকায় একাটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
মিরাজের ছোট ভাই রেজাউল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে কলেজে ভর্তি হয়ে ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করতেন তার বড় ভাই। ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিছিলেও অংশ নিয়েছিলেন। ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে মিছিল চলাকালে গুলিতে আহত হন তিনি।
রোজাউল বলেন, “পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনরা প্রথমে ভাইকে যাত্রাবাড়ীর একটি ক্লিনিকে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে অপারেশন করানোর চেষ্টা করে। কিন্তু চিকিৎসক না পাওয়ায় মঙ্গলবার সকালে ভাইকে রংপুর মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। বুধবার সেখানে তার অপারেশন হয়। কিন্তু আজকে সকালে তার মৃত্যু হয়।”
এদিকে মিরাজের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মিরাজের বাবা আব্দুস সালাম ছেলেকে হারিয়ে বার-বার মূর্ছা যাচ্ছেন। তিনি তার শহীদ ছেলের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
মহিষখোচা এলাকার ফিরোজ হোসেন বলেন, “মিরাজ খুবই ভালো ছেলে ছিল। ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছিল। কিন্তু গুলিতে তার জীবন শেষ হয়ে গেল।”
আদিতমারী থানার ওসি মাহমুদ উন-নবী বলেন, “মিরাজ গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে বলে শুনেছি। তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আতিমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, মিরাজের মৃত্যুর খবর পেয়েছেন। তিনি নিহতের পরিবার ও এলাকার লোকজনকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন।