মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে হাউজিং ব্যবসা নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত দশ জন আহত হয়েছে।
দক্ষিণা গ্রীণ সিটির সুমন ইসলাম ও নবধারা হাউজিং প্রকল্পের আল ইসলাম পক্ষের মধ্যে পুরনো বিরোধের জেরে এ সংঘর্ষ হয় বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উভয়পক্ষের চার জনকে আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকাল ৯টার দিকে খাসকান্দি এলাকায় কয়েকশ লোক সুমন ইসলামের মালিকানাধীন দক্ষিণা গ্রীণ সিটির অফিস কার্যালয় ও তার বসতবাড়ি ভেক্যু দিয়ে ভেঙে ফেলে একদল লোক। এ সময় ৫-৬টি বাড়িঘরও ভাঙচুর করা হয়। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে দুপুর ১২টার দিকে চরপানিয়া-খাসকান্দি পদ্মা সেতু রেল সংযোগ এলাকায় টেঁটা নিয়ে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে দুই পক্ষের ইট-পাটকেল নিক্ষেপের মধ্যে পুলিশের ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যানের সামনের অংশের কাচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও এ সময় পুলিশের ব্যবহৃত তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয় বলে সিরাজদিখান থানার ওসি মিজানুল হক জানান।
ওসি মিজানুল হক জানান, এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তবে আহতরা গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নেওয়ায় তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করেছে।
ওসি আরও জানান, ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে দুই শতাধিক টেঁটা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
দক্ষিণা গ্রীণ সিটির পরিচালক সুমন ইসলাম অভিযোগ করেন, “নবধারা হাউজিংয়ের ভাইস চেয়ারম্যান আল ইসলাম, পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদসহ তার লোকজন প্রায় দুই হাজার ভাড়া করা লোক নিয়ে আমার বসতবাড়ি ভেক্যু দিয়ে ভেঙে ফেলে। পরে তারা খাসকান্দি এলাকায় পুলিশের উপস্থিতিতে আমার মালিকানাধীন দক্ষিণা গ্রীণ সিটির ভবন ভেক্যু দিয়ে গুড়িয়ে দেয়।”
গত শনিবার রাতে মোতালেব মেম্বারের বাড়িঘর ভাঙচুর করে এরা তাকে কুপিয়ে আহত করে বলেও সুমনের অভিযোগ।
সুমন ইসলামের অভিযোগ, “আল ইসলাম ও তার সহযোগীরা এক বছর আগেও সন্ত্রাসী নিয়ে আমার বাড়িঘর ভাঙচুর করে। আমি আমার বাপ-চাচার জমি নিয়ে ব্যবসা করি। তাদের উদ্দেশ্য জবরদস্তি করে আমার সব জমি দখলে নিয়ে এরা ব্যবসা করা।”
অভিযোগের বিষয়ে সিরাজদিখান উপজেলা চেয়ারম্যান ও বাংলা এশিয়া নিরাপদ সিটির পরিচালক মহিউদ্দিন বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমার শরীর ভালো নেই। আমি অসুস্থ।”
নবধারা হাউজিং প্রকল্পের আল ইসলাম ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, “আমি ঢাকায় ছিলাম। সেখানে কী হয়েছে আমার জানা নেই। মোতালেব মেম্বারের বাড়িঘর ভাঙচুর ও তাকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগও সত্য নয়।”
ওসি মিজানুল হক বলেন, “পুলিশের উপস্থিতিতে বাড়িঘর ভাঙচুর বা অপরাধীদের সহযোগিতা করার প্রশ্নই আসে না। তাদের এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। এ ঘটনায় যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”