“আমরা নদীতে মাছ ধরি কিন্তু বালুর বাল্কহেডের কারণে আমাদের জাল ছিড়ে যায়। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের মারতে আসে।”
Published : 12 Mar 2025, 01:11 AM
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের মানববন্ধনে হামলায় অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- হরণী ইউনিয়নের বাসিন্দা কামরুল ইসলাম, মো. জাফর ও মো. হাশেম।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ বালু ব্যবসার বিরুদ্ধে মানববন্ধনে বালু ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা আব্দুল মতিন ও ইব্রাহিম সর্দারের নেতৃত্বে হামলার চালানো হয়। এসময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আক্তারুজ্জামান দোলনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
আহত হাশেম বলেন, অবৈধ ব্যবসায়ীদের পক্ষে ৪০-৫০ জন তাদের ওপর হামলা চালায় এবং মাইক্রোফোন ও ব্যানার নিয়ে যায়।
”আমরা ভাত খেতে পারি না ভাতের মধ্যে বালু আসে। ব্যবসা করতে পারি না বালুর জন্য। আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছি।”
তাদের অভিযোগ, নদী ভাঙন কবলিত হাতিয়ায় মেঘনা নদী পাড়ে অবৈধ বালু ব্যবসার কারণে তারা নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়েছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজশে এলাকাভিত্তিক আধিপত্য বিস্তার করে চলে এ অবৈধ ব্যবসা।
অপর আহত জাফর বলেন, “আমরা নদীতে মাছ ধরি কিন্তু বালুর বাল্কহেডের কারণে আমাদের জাল ছিড়ে যায়। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের মারতে আসে। অবৈধ বালুর ব্যবসার ফলে নদী ভেঙে যাচ্ছে। তারা নদীর পাড়ের মাটিও কেটে বিক্রি করে দেয়। এলাকার সাধারণ জনগণের দাবি, দ্রুত এই অবৈধ বালু ও মাটি ব্যবসা বন্ধ করা হোক।”
চেয়ারম্যানঘাট বাজারের ব্যবসায়ী মো. আব্দুর রহমান বলেন, গত ৫ অগাস্টের পর থেকে কিছু ব্যবসায়ী বালুর ব্যবসা শুরু করে। এছাড়া একটি অসাধুচক্র অবৈধভাবে নদীর কূল থেকে মাটি ও বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে, যার ফলে বাজারের পরিবেশ ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে বালু ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন ও ইব্রাহিম সর্দারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তারা ধরেননি।
হরণী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আক্তারুজ্জামান দোলন বলেন, যারা হামলা করেছে তারা বিএনপির কেউ নয়। তার দল সাধারণ জনগণের পক্ষে। স্থানীয় ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাতিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী শামীম বলেন, দিনব্যাপী উপজেলা সহকারী কমিশনানের (ভূমি) নেতৃত্বে বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এতে চারটি মামলায় রিয়াজ উদ্দিনকে (২৭) তিন লাখ টাকা, মো. সোহেলকে (৪২) তিন লাখ টাকা, আবদুর রহিমকে (২৫) তিন লাখ টাকা, আবুল হাশিককে (৩৫) এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এমন অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।