মাটিতে হেলে পড়া এসব ধান কাটতে কৃষি শ্রমিককে দিতে হবে অতিরিক্ত মজুরি।
Published : 07 May 2024, 09:04 PM
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে কালবৈশাখীঝড়ের তাণ্ডবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে আড়িয়ল বিলসহ উপজেলার পূর্বাঞ্চলের অসংখ্য জমিতে কাঁচা-আধাপাকা ও পাকা ধান নুয়ে পড়ায় বেশি বিপাকে পড়েছেন ধান চাষিরা।
প্রায় এক মাসের তীব্র তাপদাহের পর সোমবার রাত ৯টার দিকে শ্রীনগর উপজেলায় কালবৈশাখীর ঘূর্ণিবাতাস ও দমকা বাতাসের সাথে থেমে থেমে বৃষ্টি শুরু হয়। সঙ্গে যুক্ত হয় বজ্রপাত। এ অবস্থায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ।
ঝড় শেষে মঙ্গলবার ঘুরে দেখা গেছে, আড়িয়ল বিলসহ উপজেলার পূর্বাঞ্চলের অসংখ্য জমিতে কাঁচা-আধাপাকা ও পাকা ধান নুয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে দমকা বাতাসে ঝরে গেছে বহু জমির পাকা ধান।
কৃষকরা জানান, দীর্ঘ তাপপ্রবাহ কাটিয়ে বৃষ্টিতে তাদের মনে স্বস্তি ফিরলেও কালবৈশাখীঝড়ে জমিতে ধান হেলে পড়ায় দুশ্চিন্তা বেড়েছে। মাটিতে হেলে পড়া এসব ধান কাটতে কৃষি শ্রমিককে দিতে হবে অতিরিক্ত মজুরি।
কৃষি বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১০ হাজার ৪ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে আড়িয়াল বিলের শ্রীনগর অংশে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম ধান চাষ করা হয়। ধানের প্রদর্শনী ক্ষেত ৩০টি।
এর মধ্যে পূর্বাঞ্চলের কুকুটিয়া, পাটাভোগ, বীরতারা, আটপাড়া, তন্তর ইউনিয়নের বিভিন্ন চকে ৫০-৬০ ভাগ জমিতে ধান কাটা বাকি আছে। চলতি মাসব্যাপী এখানকার বিভিন্ন জমিতে ধান কাটা হবে। কালবৈশাখীঝড়ের বেশি ক্ষতির মুখে পড়ছেন এসব এলাকার চাষিরা।
টুনিয়ামান্দ্রা গ্রামের কৃষক মো. কালন বলেন, তার প্রায় দেড় কানি (১৪০ শতাংশে এক কানি) জমির ২৯ জাতের ধান হেলে পড়েছে। এছাড়া জমিতে বৃষ্টির পানি জমে গেছে। ফলে আধা-পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছি। এই ধান কাটতে গেলে শ্রমিকের খরচ বেড়ে যাবে অনেক বেশি।
আটপাড়ার আমির হোসেন জানান, দমকা বাতাসে অসংখ্য পাকা ধান ঝরে ক্ষেতে পড়ে গেছে। এতে ধানের উৎপাদন কমে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
পাটাভোগের একটি শ্রমিক দলের সর্দার মো. আতাউর বলেন, “সাধারণত চুক্তিতে ধান কাটতে গন্ডা প্রতি (৭ শতাংশ) ১০০০ টাকা মজুরি নেওয়া হয়। তবে এখন ক্ষেতে হেলে পড়া কাটতে গন্ডা প্রতি মজুরি নেওয়া হচ্ছে ১৩০০-১৪০০ টাকা।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহসিনা জাহান তোরণ জানান, উপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে ধান কাটা বাকি রয়েছে। ঝড়ে ঠিক কী পরিমাণ জমিতে ধান হেলে পড়েছে তা এখনও নিরূপণ করা যায়নি।
তবে ঝড়ে হেলে পড়া ধানে তেমন কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।