মঙ্গলবার মোশাররফ স্বজনের জানাজায় অংশ নিতে গেলে প্রতিপক্ষের হামলার মুখে এলাকা ছাড়েন৷ এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল৷
Published : 07 Jun 2024, 12:18 AM
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্ব বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ইউপি সদস্যের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক তরুণ নিহত হয়েছেন৷ আহত হয়েছেন নারীসহ আরও ১২ জন৷
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকায় সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে বলে জানান রূপগঞ্জ থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা৷
পুলিশ জানায়, নিহত ২৩ বছরের তরুণ মো. দ্বীন ইসলাম নাওড়া এলাকার বিল্লাত হোসেনের ছেলে।
আহতরা হলেন, নাওড়া এলাকার জাহিদ মিয়া, মো. সোহেল, শাহিন, জাহিদুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, রাজীব, হোসেন মিয়া, নাজমুল প্রধান, জেসমিন, ইভা, ওয়াসিম ও সাখাওয়াত। তারা রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন৷
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের সঙ্গে কায়েতপাড়ার সাবেক ইউপি সদস্য ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশাররফ হোসেনের দীর্ঘদিনের বিরোধ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ও উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়৷
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ওসি দীপক বলেন, মঙ্গলবার মোশাররফ এক স্বজনের জানাজায় অংশ নিতে গেলে প্রতিপক্ষের হামলার মুখে এলাকা ছাড়েন৷ এ নিয়ে তিনদিন ধরে নাওড়ায় দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছিল৷
এরই জেরে বৃহস্পতিবার বিকালে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়, পরে সন্ধ্যায় তারা সংঘর্ষে জড়ায় বলে জানান স্থানীয়রা৷
এ বিষয়ে জানতে মোশাররফ হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি৷
তবে, মোশাররফের ফুফাতো ভাই ও নিহত দ্বীন ইসলামের চাচা নাজমুল প্রধান অভিযোগ করে বলেন, “বিকালে মিজানুর তার লোকজন নিয়ে মোশাররফের বাড়িতে হামলা করেন৷ এতে প্রতিবাদ জানালে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়৷
“এ সময় মিজানুর ও তার লোকজনের ছোঁড়া গুলিতে দ্বীন ইসলাম আহত হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। মিজান নিজে আমার ভাতিজাকে (দ্বীন ইসলাম) গুলি করছে।”
ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও হামলার ঘটনায় তারা নির্বিকার ছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷
তবে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত না৷ শুনেছি, গ্রামবাসীর উপর মোশাররফ ও তার ভাইয়ের লোকজন হামলা চালালে গ্রামবাসীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়৷”
পুলিশের নির্বিকার থাকার অভিযোগকে ‘পুরোপুরি মিথ্যা’ দাবি করে ওসি দীপক বলেন, “ঘটনার সময় সেখানে নাওড়া পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ছিলেন। তারা শুরুতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে এবং পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশও সেখানে পৌঁছায়৷
“পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উভয় পক্ষকে ধাওয়া দেয় এবং অন্তত ১৩ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে৷ পরে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে৷”
তবে রাত ৯টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়ে এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে।