Published : 29 Apr 2025, 03:44 PM
বকেয়ার জটিলতায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের তিতাস গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) শিল্প উৎপাদন।
তবে পল্লী বিদ্যুৎ থেকে সংযোগ নিয়ে মঙ্লবার পুনরায় উৎপাদন চালু হয়েছে সাভারের আশুলিয়ার এই শিল্পাঞ্চলে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর মহাব্যবস্থাপক আখতারুজ্জামান লস্কর বলেন, ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের গ্যাস বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তিতাস কর্তৃপক্ষ। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, “সোমবার সন্ধ্যায় ডিইপিজেড ও ইউনাইটেড পাওয়ার প্লান্টের কর্মকর্তারা আমাদের কাছে আসলে আমরা ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করি। মঙ্গলবার সকালে পুনরায় আরও ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এরপর সকল কারখানার উৎপাদন শুরু হয়।”
তিনি বলেন, “যে ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমরা ডিইপিজেডে সরবরাহ করেছি এর বিপরীতে ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মূল গ্রিড থেকে আনা হয়েছে তাই বিদ্যুৎ সংকটে পড়তে হবে না।”
এআগে সোমবার দুপুরে ডিইপিজেডে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড'র পাওয়ার প্লান্টের গ্যাস বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এতেই এ সঙ্কট তৈরি হয়।
সেদিন বিদ্যুৎ না থাকায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বেশিরভাগ কারখানা ছুটি দিয়ে দেয় ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক শরীফুল ইসলাম বলেন, “পল্লী বিদ্যুৎ থেকে সাপোর্ট নিয়ে কারখানাগুলো চালানো হচ্ছে। কিছু কারখানা জেনারেটর ব্যবহার করে কাজ করছে। তবে তারা (পল্লী বিদ্যুৎ) এটি নিরবচ্ছিন্নভাবে দিতে পারবে না। ফলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না।”
তিনি আরও বলেন, “তিতাসের সঙ্গে ইউনাইটেডের বকেয়া নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যা। এক পক্ষ বলছে বকেয়া নেই, অপর পক্ষ বলছে বকেয়া রয়েছে। এই সমস্যায় ভোগান্তিতে পড়েছে ডিইপিজেডের কারখানাগুলো। উৎপাদন ও রপ্তানির ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।”
ডিইপিজেডে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মমতাজ হাসান বলেন, “সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বেপজা ও তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছেন।”
তবে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন বলেন, “গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত।”
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর মহাব্যবস্থাপক আখতারুজ্জামান লস্কর বলেন, “২০০৭ অথবা ২০০৮ সালের দিকে পল্লী বিদ্যুতের লাইন দিয়েই ডিইপিজেডের সব কারখানা চলতো। পরে ইউনাইটেড পাওয়ার প্লান্ট গ্যাসের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সরবরাহ শুরু করে।
“তবে ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ চাইলে আমরা পুনরায় পার্মানেন্ট ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারব। এতে সাধারণ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের উপর কোনো প্রভাব পড়বে না। বাড়তি কোনো লোডশেডিং এর কবলে পড়তে হবে না।”