তিনি কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
Published : 28 Jan 2025, 12:31 AM
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার শিমা আক্তার কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তবে অর্থাভাবে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে তার।
বাবা কৃষিকাজ করে সংসার চালালেও বর্তমানে তিনি অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছেন। মেয়ের মেডিকেল কলেজে ভর্তির খরচ বহন ও পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া প্রায় অসম্ভব দরিদ্র এই পরিবারের পক্ষে।
অর্থাভাবে শিমার ভর্তি নিয়ে শঙ্কার খবর জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নজরে এসেছে। সোমবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাকে ভর্তিতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে শিমাকে সহযোগিতা করা হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
শিমা কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজাঙ্গালীয়া গ্রামের আলী আহমেদের মেয়ে। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে শিমা পঞ্চম।
শিমা ২০২১ সালে উপজেলার চরকালকিনি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ৮৯ পেয়ে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। অর্থাভাবে নিয়মিত কলেজও যেতে পারতেন না তিনি। ২০২৩ সালে এইচএসসিতে জিপিএ ৪ দশমিক ৮৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথমবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েননি শিমা। এবার মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪ হাজার ৩১৬তম স্থান অর্জন করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
পড়ালেখার প্রতি মেয়ের প্রচণ্ড আগ্রহের কথা জানিয়ে মা আয়েশা বেগম বলেন, “অনেক কষ্ট করে শিমার পড়ালেখার খরচ চালিয়ে এসেছি। অভাব-অনটনের সংসারে তাকে মেডিকেলে ভর্তি করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।”
দারিদ্রকে জয় করা গুণীজনদের জীবন সংগ্রাম পড়ে অনুপ্রাণিত হওয়ার কথা জানিয়ে শিমা আক্তার বলেন, “আমি শুরু থেকেই মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন দেখেছি। প্রথমবার না পারলেও এবার আমি ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। আমার এ সাফল্যে মা, ভাই ও শিক্ষকরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছেন। এখন স্বপ্ন পূরণে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।”
চরকালকিনি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মাহমুদুর রহমান বেলায়েত বলেন, অর্থাভাবে শিমার পড়ালেখার বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। পরে বিদ্যালয় থেকে তার সব খরচ মওকুফ করা হয়েছিল। তবে সে অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী। তার সাফল্য কামনা করছি।
অর্থাভাবে মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়া শিমাকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার।