এতে চাষিদের এক কোটি ৭৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য বিভাগ।
Published : 08 Aug 2023, 12:40 PM
তিনদিনের টানা বর্ষণে বাগেরহাটে চার হাজারের বেশি মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে মাছ চাষীদের পৌনে দুই কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি পোষাতে সরকারের সহযোগিতা চান চাষিরা।
বাগেরহাট মৎস্য অধিদপ্তরের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) এ এস এম রাসেল বলেন, গত তিনদিনের অবিরাম বর্ষণে জেলার ছয় উপজেলাতে চার হাজার ২৩০টি ছোট বড় মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে এক কোটি ৭৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে চাষিদের।
রামপালে ১ হাজার ৫৪০টি, মোরেলগঞ্জে ৮৫৫টি, মোংলায় ৭২০টি, কচুয়ায় ৬৪০টি, সদরে ২৭৫টি এবং শরণখোলায় ১০০টি মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে।
জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাট প্রায় ৬৭ হাজার ছোট-বড় মাছের ঘের রয়েছে।
সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের খেগড়াঘাট গ্রামের মৎস্যচাষি কবির হোসেন জানান, টানা বৃষ্টিতে তার ডেমা বিলের প্রায় ২০ বিঘা জমিতে থাকা ঘেরের চিংড়ি ও সাদা মাছ ভেসে গেছে। এতে তার প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, বৃষ্টিতে পানি বাড়তে থাকায় ঘেরের চারপাশে নেট জাল দিয়ে মাছ রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু স্রোতের তোড়ে সেই জাল ছিড়ে মাছ ভেসে গেছে।
প্রায় ১৫ বছর ধরে মাছ চাষে জড়িত কবির হোসেন আক্ষেপ জানিয়ে বলেন, “প্রতি দুর্যোগেই ক্ষতিগ্রস্ত হই, কিন্তু কখনোই সরকারি সহযোগিতা পাইনি।”
ঘের মালিক ও মাছ চাষীদের অভিযোগ, প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে প্রবল জোয়ার ও অতিবৃষ্টিতে তাদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। কিন্তু সরকার তাদের কোনো আর্থিক প্রণোদনা দেয় না।
বাগেরহাট জেলা চিংড়ি চাষী সমিতির ফকির মহিতুল ইসলাম বলেন, উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে বর্ষা মৌসুমে নানা দুর্যোগ আসে। দুর্যোগকে সঙ্গী করেই এই জেলায় চাষীরা গলদা, বাগদা ও সাদা মাছ চাষ করে আসছে। এর মাধ্যমে চিংড়িসহ মাছ রপ্তানি করে এই খাত থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসে দেশে।
“দুর্যোগের কারণে চাষীরা সব সময় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত চাষীরা সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের আর্থিক সহযোগিতা পান না। সরকারের উচিত গুরুত্বপূর্ণ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের সহযোগিতা করা।”
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাসেল বলেন, মৎস্য বিভাগ উপকূলীয় জেলার চাষীদের দুর্যোগ সহনশীল করে ঘের প্রস্তুত করতে পরামর্শ দিয়ে থাকে। তবে অতিমাত্রায় দুর্যোগ হলে এই পেশার মানুষদের আর্থিক ক্ষতিতে পড়তেই হয়।
“মৎস্য বিভাগ আর্থিক কোনো প্রণোদনা দেয় না তবে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের সহযোগিতার বিষয়ে মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে অসংখ্যবার মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। সহযোগিতার বিষয়টি সরকারই ঠিক করতে পারে।”